Site icon অবিশ্বাস

আবুল হুসেনকে গুলি করে হত্যার হুমকী

আবুল হুসেন ছিলেন প্রগতিবাদী সংস্কারমনা লেখক, সাহিত্যিক ও সংগঠক। ১৯২৭ সালে নিজের হাতে গড়া মুসলিম সাহিত্য সমাজের অধিবেশনে ‘আদেশের নিগ্রহ’ নামে একটি প্রবন্ধ পাঠ করেন। প্রবন্ধটি পরবর্তীতে ১৯২৯ সালে ঢাকার ‘শান্তি’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তখন কবি গোলাম মোস্তফার মত সাম্প্রদায়িক লেখকরা আবুল হুসেনকে বাগে পেয়ে বসে। তারা এর বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করে দেন। প্রবন্ধটির উর্দু সংস্করণ লিখে তা উর্দুভাষী বুদ্ধিজীবীদের কাছেও বিলি করেন। খুব দ্রুত বাঙালি এবং উর্দুভাষী মুসলমান সমাজে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

উত্তেজনার জের ধরে খান বাহাদুর আবদুল হাফিজ নামে ঢাকার এক সমাজপতি পিস্তল নিয়ে আবুল হোসেনের বাসায় হাজির হন। তিনি প্রথমে আপত্তিকর লেখার জন্য আবুল হোসেনকে তিরষ্কার করেন। এবং বলেন, এ জাতীয় লেখা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি না দিলে তাকে গুলি করা হবে। আবুল হোসেনের ছোট ছোট সন্তানরা তখন পিতার পাশে এসে দাঁড়ায়। তাদের মুখের দিকে চেয়ে অবশেষে তিনি প্রতিশ্রুতি দিতে বাধ্য হন।

পরে ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় আহসান মঞ্জিলে আবুল হুসেনের বিরুদ্ধে বিচার সভা বসে। যে বিচারের রায় আগেই আন্দাজ করতে পারেন তিনি। বিচারে তার বিরুদ্ধে ধর্মদ্রোহ এবং মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগ এনে লিখিতভাবে ক্ষমা চাইতে বলা হয়। একই সাথে এই ক্ষমাপত্র জনসাধারণকে অবগত করার উদ্দেশ্যে অনুমতি প্রদানের জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়। সহযোগী সংগঠকদের অনুরোধে আবুল হোসেন অভিযোগ স্বীকার করে ক্ষমা চান এবং তা মুদ্রণের অনুমতি দেন।

Exit mobile version