Site icon অবিশ্বাস

উখিয়ায় সংখ্যালঘু পাড়ায় হামলা

কক্সবাজারে উখিয়া-টেকনাফের আসনে নির্বাচনে বিজয়ী বিএনপি ও চারদলীয় জোটের সমর্থকরা আকস্মিক হামলা চালিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৩টি বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে ও ৭-৮ জনকে আহত করেছে। অভিযোগ করা হয়েছে, ঘটনার পর পুলিশ সেখানে গেলেও কিছুক্ষণ অবস্থান করে আবার চলে আসে। উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমকা পালং গ্রাম ও উত্তর ধুরুংখালী ইউনিয়নের মহাজন পাড়ায় এই তাণ্ডব চালানো হয়েছে। আমাদের কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, প্রায় ৭০-৮০জন সন্ত্রাসী ও বিএনপি কর্মী স্থানীয় ডাকাত সর্দার নুরুল ইসলাম নুরু, ডাকাত সুরুত আলম, বিএনপি কর্মী ফরিদকে নিয়ে সশস্ত্র অবস্থায় আকস্মিক ঐ হিন্দু ও বড়ুয়া পাড়ায় হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন বয়সের লোকজনের ওপরও হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা ঐ দুটি সংখ্যালঘুদের পাড়ায় হামলা চালিয়ে যাওয়ার সময় হুমকি দেয়, তোদের হাসিনাকে বল গিয়ে এবার তোদের বাঁচানোর জন্য তোদেরকে ভারত চলে যেতে হবে, নতুবা কেয়াং (বৌদ্ধদের মন্দির) সাক্ষী রেখে বলতে হবে আর কোন দিন আওয়ামী লীগকে ভোট দিবি না।’ হামলার ঘটনার পর সংখ্যালঘুরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কাছে অভিযোগ করলে তিনি সান্ত্বনামূলক কথাবার্তা বলে বিদায় করে দেন। এ ব্যাপারে এখনো কোন ব্যাবস্থা তার পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি। এদিকে ঐ সন্ত্রাসী দলটিই উখিয়ার কোর্টবাজার এলাকায় স্থানীয় বিএনপি প্রার্থীর সমর্থনে শ্লোগান দিয়ে একটি মিছিল বের করে। মিছিল শেষে সন্ত্রাসীরা কোর্টবাজারে অবিরত ১৫/২০টি সেলুনে গতকাল থেকে চুলকাটা মাথাপিছু ৩ টাকা, শেভ করা জনপ্রতি ২ টাকা করার হুমকি দিয়েছে বলে স্থানীয় শীল কল্যাণ সমিতি অভিযোগ করেছে। নতুবা গতকাল বুধবার থেকেই তাদেরকে দোকান বন্ধ রাখার হুমকিও সন্ত্রাসীরা দিয়েছে বলে অভিযোগে জানা গেছে। এদিকে হামলার পর প্রায় ৫ হাজার হিন্দু-বড়–য়ার এই গ্রাম এখন জনশূন্য। স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতায় এলাকাবাসীর মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সংখ্যালঘু যুবক-যুবতীদের গ্রাম থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়াও বিঘ্নিত হচ্ছে। এ অবস্থায় সংখ্যালঘু দেশের রাষ্ট্রপতি ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। প্র্রসঙ্গত, কয়েক বছর থেকেই ঐ এলাকার সেলুন ̧লোতে চুলকাটা ১৫ টাকা ও সেভ করা ৫ টাকা হিসাবে চালু রয়েছে। এছাড়া সন্ত্রাসীরা উখিয়ার কোর্টবাজারে সংখ্যালঘুদের হাতে পেলে উচিত শিক্ষা দেবে বলে প্রকাশ্যে মাইকিং করছে।
ভোরের কাগজ, ৪ অক্টোবর ২০০১

Exit mobile version