Site icon অবিশ্বাস

কারা হেফাজতে আইনজীবী পলাশকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ

পঞ্চগড় জেলা কারাগারে (কারা হেফাজতে) থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের তালিকাভুক্ত আইনজীবী পলাশ কুমার রায়কে পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন। এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

রবিবার (৫ মে) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তোলেন ব্যারিস্টার খোকন।

তিনি বলেন, ‘আইনজীবী পলাশ কুমার রায়ের মা মিরা রানী রায় তার ছেলেকে অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন। একই সঙ্গে পলাশ অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর তাদেরকে খবর না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি (পলাশের মা)। এ ঘটনায় পলাশের মা সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন। মৃত্যুর আগে পলাশ তার মায়ের কাছে তাকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ করে গেছেন।’

আইনজীবীকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগের প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি এবং ওই ঘটনার সঙ্গে কারা কর্তৃপক্ষের কোনও যোগসাজশ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে সরকারের প্রতি আহ্বান ও ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মাহবুব উদ্দিন খোকন।

প্রসঙ্গত, এর আগে কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠান পলাশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল। সেই মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গত ২৫ মার্চ দুপুরে পরিবারের লোকজন নিয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনশন শুরু করেন পলাশ কুমার রায়। পরে সেখান থেকে উঠে গিয়ে তারা শহরের শের-ই-বাংলা পার্ক সংলগ্ন মহাসড়কে এসে মানববন্ধন শুরু করেন। একপর্যায়ে রাস্তা বন্ধ করে হ্যান্ডমাইকের সাহায্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে কটূক্তি করেন পলাশ। এমনকি প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী সম্পর্কেও অশালীন বক্তব্য দেন। ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয়রা তাকে সদর থানা পুলিশের কাছে তুলে দেন। ওইদিন বিকালে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করার অভিযোগে স্থানীয় রাজীব রানা নামে এক তরুণ তার বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন। ওই দিনই তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

আইনজীবী পলাশকে গত ২৬ এপ্রিল বিকালে ঢাকায় পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু সকালে হঠাৎ করে হাসপাতালের বাইরে থাকা একটি টয়লেট থেকে তিনি অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় দৌড়ে বের হয়ে আসেন। এ সময় কারারক্ষীরা তাকে উদ্ধার করেন এবং শরীরের আগুন নেভান। আগুনে তার শরীরের ৪৭ শতাংশ পুড়ে যায়। রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরদিনই তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। গত ৩০ এপ্রিল দুপুরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পলাশ কুমার রায় মারা যান।

বাংলা ট্রিবিউন

Exit mobile version