Site icon অবিশ্বাস

কালীগঞ্জের তিল্লা গ্রামে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা রেহাই পায়নি অন্ধ বিবেককুমারও

‘ইবারের নির্বাচনে একটু নেচেগেয়েই ভোট করিছি। তার জন্নিই সন্ত্রাসীরা আমাদের মারধর করিছে। ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়েছে। ছাগল-গরু, জামাকাপুড় এমনকিছিঁড়া মশারি পর্যন্ত লুট করি নিয়ে গিয়েছে। সন্ত্রাসীরা অন্ধ বিবেককুমারকেও রেহাই দিইনি’⎯কথাগুলো বলছিলেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার তিল্লা গ্রামের নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের কয়েকজন। জানা গেছে, গত ৬ অক্টোবর গভীর রাতে একদল সন্ত্রাসী তিল্লা গ্রামের হিন্দু পাড়ায় সশস্ত্র হামলা চালিয়ে নারী-পুরুষদের মারপিট করে নগদ টাকা, গরু-ছাগল, কাপড়-চোপড়সহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের হামলায় একজন অন্ধ ও কয়েকজন মহিলাসহ ১৫ জন আহত হন। গত ১৪ অক্টোবর সরেজমিনে তিল্লা গ্রাম ঘুরে হামলার সত্যতা পাওয়া যায়। সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত দুর্গাপদ শিকদার জানান, নৌকায় ভোট দেয়ার কারণে তাদের অল্প দিনের মধ্যে ভারতে চলে যেতে বলেছে। আহত গোবিন্দের স্ত্রী সাবিত্রী জানান, সন্ত্রাসীরা তার হাত ভেঙ্গে দিয়েছে। ডাক্তার দেবপ্রসাদকে (৮০) মারপিট করে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। চাঁদার টাকা না দিলে ভারতে পাঠিয়ে দেয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে। সন্ত্রাসীরা বারান্দায় শুয়ে থাকা অন্ধ বিবেক কুমারকে (৩০) বেদম মারপিট করে তার দুটি ছাগলসহ সর্বস্ব লুট করেছে। হামলা সম্পর্কে মহিলারা জানান, রাতে যখন সন্ত্রাসীরা তাদের পাড়ায় আক্রমণ করে, তখন পুরুষ মানুষের পাশাপাশি তারাও ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। যারা পালাতে পারেননি তারা মারপিটের শিকার হয়েছেন। মহিলারা জানান, পার্শ্ববর্তী সিমলা, গাতিবিলা, পুরুবিনা, পুকুরিয়া ও মনোহরপুর গ্রামের সন্ত্রাসীরা জোটবদ্ধ হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। হামলাকারীরা বিএনপি সমর্থিত বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসন আশ্বাস দেয়া ছাড়া নিরাপত্তাজনিত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আতিয়ার রহমান জানান, মূলত এক শ্রেণীর সুবিধাবাদী সন্ত্রাসী এ ঘটনা ঘটিয়েছে। যাদের মধ্যে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, তিল্লা গ্রামের সংখ্যালঘুরা কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জানমালের নিরাপত্তার দাবি করলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা গ্রামটি পরিদর্শন করেন। বর্তমানে গ্রামটিতে স্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করছে।

প্রথম আলো, ১৭ অক্টোবর, ২০০১

Exit mobile version