Site icon অবিশ্বাস

কুমিল্লার মুরাদনগরে ছুটি না পেয়ে পাঁচতলা ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে মাদরাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছুটি চেয়ে না পেয়ে কুমিল্লার মুরাদনগরে মাদরাসার পাঁচতলা ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে পড়ে এক শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ১৯ জুন রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার মারকাযুস সুন্নাহ মাদরাসায় এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।

 

নিহত ফয়সাল মিয়া (১২) বি-পাড়া উপজেলার মহালক্ষীপাড়া গ্রামের মৃত আবুল ফজল মাস্টারের ছেলে। সে ওই মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিল। নিহতের মায়ের কোনো অভিযোগ না থাকায় এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। তবে ঘটনার পর মাদরাসার পরিচালক গাঢাকা দিয়েছেন।

জানা যায়, গত ৫ দিন যাবৎ বাড়ি যাওয়ার জন্য ছুটি চেয়ে আসছিল ফয়সাল। ছুটি না পেয়ে অনেকটা মন খারাপ নিয়ে রবিবার বিকালে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে মাদরাসার ছাদে ওঠে ফয়সাল। মাগরিব নামাজের আগে সকল শিক্ষার্থীরা যখন ছাদ থেকে নামতে যায় তখন ফয়সাল দৌড়ে গিয়ে ছাদ থেকে লাফ দেয়। পরে ভবনের পাশে থাকা দোকানের টিনের চালা ভেঙে মাটিতে পড়ে যায় সে। ঘটনাস্থল থেকে মাদরাসার শিক্ষক ও স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার বেশ কয়েকজন বলেন, মারকাযুস সুন্নাহ মাদরাসাটি ভবনের পঞ্চম তলায় অবস্থিত। খেলাধুলার জন্য ছাত্রদের নিচে নামতে না দিয়ে প্রতিদিন বিকালে তাদের ছাদে নিয়ে যান শিক্ষকরা। ছাদের চারদিকে অল্প উচ্চতার রেলিং দেওয়া থাকলেও তা ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট নয় এবং খেলাধুলা করা তো আরো ঝুঁকিপূর্ণ।

মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাফেজ আরিফ হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ফয়সাল আমার আত্মীয় হওয়ায় তার মা এই মাদরাসায় ভর্তি করান। সে যেন পালিয়ে না যায় সে জন্য আমরা তাকে সব সময় চোখে চোখে রাখতাম। গত কয়েকদিন সে বাড়ি যাওয়ার জন্য ছুটি চেয়েছিল। বিষয়টি তাকে মাকে বলে ছিলাম। তার মা বলেছে ঈদের ছুটিতে তাকে আমার সাথে বাড়ি নিয়ে যেতে। তাই তাকে ছুটি দিইনি।

নিহত শিক্ষার্থী ফয়সালের মা, বড় ভাই ও মামা জানান, মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাফেজ আরিফ হাসান আত্মীয় হওয়ায় ফয়সালকে এই মাদরাসায় ভর্তি করা হয়। কিন্তু হাফেজ হওয়ার আগে তার এই মর্মান্তিক মৃত্যু হওয়ায় তারা বাকরুদ্ধ। তবে কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় এ বিষয়ে থানায় মামলা করিনি।

বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।

কালের কণ্ঠ

Exit mobile version