Site icon অবিশ্বাস

গাইবান্ধায় আটকে রেখে নির্যাতন, আ’লীগ নেতার বাড়িতে ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ

হাসান আলী (৩৮) নামে এক ব্যবসায়ীকে বাড়িতে ৩ দিন ধরে আটকে রেখে নির্যাতন এবং হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানার বিরুদ্ধে।

১০ এপ্রিল শনিবার সকালে আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানার বাড়ি থেকে ওই ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে জনগণের চাপের মুখে ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে বাড়ি থেকে আটক করতে বাধ্য হয় পুলিশ। তবে পুলিশের ভাষ্য ওই ব্যবসায়ী আত্মহত্যা করেছেন এবং আওয়ামী লীগ নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়েছে।

নিহত হাসান আলী শহরের থানাপাড়ার আফজাল সুজের সাবেক স্বত্বাধিকারী ছিলেন।

সদর থানায় দায়েরকৃত গত ৭ মার্চ হাসান আলীর স্ত্রী বিথী বেগমের এক লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, মাসুদ রানা একজন দাদন ব্যবসায়ী। তার কাছ থেকে ঋণ নেয়া টাকার সুদের কিস্তি দিতে না পারায় গত ৬ মার্চ হাসান আলীকে সকাল ৯টায় তার থানাপাড়ার বাসা থেকে মাসুদ রানা ব্যবসা সংক্রান্ত কথা আছে বলে নিজ মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে চলে যায়।

এরপর মাসুদ রানা তার নিজ বাসায় হাসানকে আটকে রেখে মানসিকভাবে নানা ধরনের নির্যাতন চালায় এবং ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে। হাসান আলী তার স্ত্রী বিথী বেগমকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবহিত করলে ওই বাড়ি থেকে সে তার স্বামীকে নানাভাবে উদ্ধারের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

এ সময় মাসুদ রানা আটক হাসান আলীকে ছেড়ে না দিয়ে উল্টো আরও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি করবে বলে বিথী বেগমকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।

এ অবস্থায় বিথী বেগম থানায় গেলে থানা কর্তৃপক্ষ দায়েরকৃত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ মার্চ হাসানকে মাসুদ রানার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে থানায় এনে ছেড়ে দিলে মাসুদ রানা আবারও তাকে তুলে নিয়ে যায়। সেই থেকে মাসুদ রানার বাড়িতেই আটক থাকে হাসান আলী। পরে তাকে নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

পরে শনিবার সকালে তার মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশ মাসুদ রানার বাড়ি গিয়ে হাসান আলীর লাশ উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে হাসান আলীর স্ত্রী বিথী বেগম ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, হাসান আলীকে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। পরে পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানাকে হ্যান্ডকাপ ছাড়াই থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এলাকার লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন এবং তাকে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে ও কোমরে দড়ি লাগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানান।

এ সময় বিক্ষুব্ধ অনেকে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে থানা থেকে আরও পুলিশ গিয়ে মাসুদ রানার হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে এবং হেলমেট পরিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, এটি একটি আত্মহত্যার ঘটনা। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাসুদ রানাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

এ ব্যাপারে এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, হাসান আলী আত্মহত্যা করলে তার নিজ বাড়িতে করবে। মাসুদ রানার বাড়িতে হাসান আলী কেন আত্মহত্যা করবে? এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

যুগান্তর

Exit mobile version