গাজীপুরে ব্যাংকের ভেতর বোমা নিয়ে প্রবেশ করে ব্যাংক ম্যানেজারকে জিম্মি করার চেষ্টাকালে একজনকে আটক করা হয়েছে।
১৬ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তায় শাপলা ম্যানশনে অবস্থিত প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় জড়িত বোমাবহনকারী ব্যক্তিকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। আটককৃতের নাম আবু বকর (৩২)। তিনি বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ থানার বিশারীঘাটা এলাকার মৃত সেকান্দার আলী হাওলাদারের ছেলে। তিনি বোর্ড বাজারের বটতলা এলাকায় বসবাস করেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার মো. আজাদ মিয়া বিকেলে সাংবাদিকদের জানান, বেলা পৌনে একটার দিকে একজন লোক একটি কালো ব্যাগ বহন করে ব্যাংকের ম্যানেজারের কক্ষে প্রবেশ করে তাকে জিম্মি করার চেষ্টা করে। পরে ওই ব্যক্তি ব্যাংক ম্যানেজারকে জানায় তার সঙ্গে বোমা রয়েছে। ব্যাংকের লোকজন বিষয়টি তাৎক্ষণিক পুলিশকে অবহিত করে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে ব্যাগ বহনকারীর কাছ থেকে ব্যাগটি আলাদা করে ফেলে এবং ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
পরে ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) কে খবর দেয়া হলে সিটিটিসির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের বোমা নিষ্ক্রিয়দল বিকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পরে ব্যাগে বোমা সদৃশ্য তিনটি পাইপের মাধ্যমে তৈরী ইমপ্রোভাইস ইলেকট্রনিক ডিভাইস (আইইডি) ছিল তা নিষ্ক্রিয় করা হয়।
তিনি আরও বলেন, তিনটি পাইপের সমন্বয়ে একটি ইমপ্রোভাইস ইলেকট্রনিক ডিভাইস (আইইডি) তৈরী করা হয়েছে। এটিকে পাইপ বোমা বলা হয়ে থাকে। ব্যাংকে বোমা রাখার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। প্রথমে ব্যাংক ও মার্কেটের লোকজনদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। পরে বোমাটিকে নিষ্ক্রিয় করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আটককৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্তের পর পুরো বিষয়টি জানা যাবে।
বোমা নিষ্ক্রিয় করার সময় দুটি বিষ্ফোরণের শব্দে চান্দনা চৌরাস্তার পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়ে উঠে। তিনটি পৃথক পাইপের সঙ্গে বোমাটি থাকলেও পরে বোমা নিষ্কৃয়দল তা দুটি ভাগে ভাগ করে পৃথকভাবে রাস্তার উপর বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্কৃয় করেন।
ব্যাংকে বোমা উদ্ধারের খবর পেয়ে ব্যস্ততম চান্দনা চৌরাস্তার শত শত লোক ওই এলাকায় ভিড় করে। পুলিশ কিছু সময়ের জন্য ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন ও জনসাধারণ চলাচল বন্ধ করে দেয়। বিপুল সংখ্যক আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা পুরা এলাকাটি ঘিরে রাখে। এসময় সাধারণ মানুষের মাঝে আতংক সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে প্রাইম ব্যাংকের চান্দনা চৌরাস্তা শাখার ব্যবস্থাপক মোল্লা ফরিদ আহমেদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কোন কথা বলতে অস্বীকার করেন।
বাসন থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, আটককৃত ব্যক্তি নগরীর বোর্ড বাজারের বটতলায় যে বাসায় ভাড়া থাকতো তা ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওই বাসাটিতে অভিযান চালানো হবে। আটক ব্যক্তি ডাকাত না কোন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছক ব্যাংকের এক গ্রাহক বলেন, ব্যাংকে প্রবেশের সময় করোনার কারণে নিরাপত্তাকর্মীরা গ্রাহকদের হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্প্রে করলেও কেউ ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করলে তাকে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করা হয় না।