সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার রামনগর গ্রামের দরিদ্র কৃষক নারায়ণ চন্দ্র কর্মকারের স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করার পর প্রায় দুই সপ্তাহ অতিক্রম হলেও পুলিশ একজন আসামিকেও গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের রহস্যজনক নীরবতার সুযোগ নিয়ে প্রভাবশালী আসামিরা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য বাদিকে অব্যাহত-ভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকাশ্য দিবালোকে স্কুল ছাত্রীর ওপর নজীরবিহীন হামলার পরও আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় রামনগর গ্রাম ও আশপাশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের মধ্যে ন্যায়বিচার পাওয়ার ব্যাপারেও সন্দেহ-অবিশ্বাস দেখা দিচ্ছে। এক লিখিত অভিযোগে জানা যায়, ১৮ এপ্রিল সকালে রামনগর গ্রামের নারায়ণ চন্দ্র কর্মকারের মেয়ে দশম শ্রেণীর ছাত্রী প্রতিদিনের মতো স্কুলে যাচ্ছিল। পথে রামনগর পুরনো খেয়াঘাটের কাছে পৌঁছানো মাত্র পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একই গ্রামের মো. ঈমান আলী গাজীর ছেলে মো. সিরাজুল ইসলাম দলবলসহ ওই স্কুলছাত্রীর ওপর চড়াও হয়। সিরাজুল মেয়েটিকে জোরপূর্বক পাশের একটি চিংড়ি ঘেরে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় মেয়েটির আর্তচিৎকারে ধর্ষণের চেষ্টা ব্যর্থ হয়; কিন্তু হামলাকারী সিরাজুল মেয়েটির মুখমণ্ডল ও শরীরের বিভিন্ন স্থান কামড়ে জখম করে। জামা কাপড়ও ছিঁড়ে ফেলে। চিৎকার শুনে গ্রামের লোকজন এসে পড়ায় শেষ পর্যন্ত সিরাজুল ও তার সঙ্গীরা চলে যায়। তবে যাওয়ার সময় তাকে আসিড নিক্ষেপ ও জীবনে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যায়। এই ঘটনার পর আশাশুনি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেন; কিন্তু তৎপরতা ওই পর্যন্ত শেষ। প্রায় দুই সপ্তাহ পার হতে চলল প্রধান আসামিসহ কেউ গ্রেফতার হয়নি। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিচ্ছে।
সংবাদ, ৪ মে ২০০২