Site icon অবিশ্বাস

চট্টগ্রামে পুলিশ হেফাজতে দোকান কর্মচারীর মৃত্যু, মারধরের অভিযোগ

চট্টগ্রাম নগরীতে ‘লকডাউনে’র মধ্যে খোলা একটি দোকান থেকে দু’জন কর্মচারীকে ধরে পুলিশ ফাঁড়িতে নেওয়ার পর প্রায় ৬০ বছর বয়সী একজনের মৃত্যু হয়েছে। আরেক কর্মচারীর অভিযোগ, ফাঁড়িতে একজন পুলিশ কর্মকর্তা চড় দেওয়ার পর তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান।

 

তবে পুলিশ মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বুধবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নগরীর কোতোয়ালি থানার বকশিরহাট এলাকায় কাপড়ের বড় মার্কেট টেরিবাজারে এই ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো. আব্দুর রউফের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। এছাড়া কোতোয়ালি থানার অধীন বকশিরহাট পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই কামরুল ইসলাম ও দুই কনস্টেবলসহ তিন জনকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

মৃত গিরিধারি চৌধুরী (৬০) টেরিবাজারের প্রার্থনা বস্ত্রালয়ের কর্মচারী। তার বাসাও টেরিবাজার এলাকায়। তার এক মেয়ে ও জামাতাও পুলিশের কনস্টেবল।

ঘটনাস্থলে গিয়ে নগর পুলিশের  উপকমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য নেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তিনি  জানিয়েছেন, দোকানের ভেতর থেকে তিন কর্মচারী মালামাল বের করছিলেন। টেরিবাজারের স্থানীয় লোকজনই চুরি ভেবে পুলিশ ডেকে নিয়ে যায়। পুলিশ তাদের ধরে ফাঁড়িতে নিয়ে যায় এবং মালিককে ফোন করার জন্য গিরিধারি চৌধুরীকে বলে। সেখানে গিরিধারি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে যান এবং অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

মেহেদী হাসান বলেন, ‘প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ আমাকে পুলিশ মারধর করেছে বলে অভিযোগ করেনি। তবে বিভিন্নভাবে কেউ কেউ বলছেন, মারধর করা হয়েছে। এটা আমরা তদন্ত করার জন্য তিন সদস্যের কমিটি করেছি। এডিসি রউফের সঙ্গে কোতোয়ালি জোনের এসি (সহকারী কমিশনার) নোবেল চাকমা ও ওসি মোহাম্মদ মহসীনকে কমিটিতে রাখা হয়েছে। তাদের একদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছি। আর যেহেতু পুলিশ হেফাজতে মারা গেছে, এর দায় সংশ্লিষ্টরা এড়াতে পারেন না। এজন্য টহল পার্টিতে যে তিন জন ছিলেন তাদের ক্লোজ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অবশ্যই আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে গিরিধারির লাশ দেখে এসে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো. আব্দুর রউফ  দাবি করেছেন, মৃতের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন তিনি দেখেননি। মৃতের ছেলেও তাকে জানিয়েছেন, তার বাবা তিনবার স্ট্রোক করেছেন। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী  বলেন, ‘এলাকাবাসী হিসেবে আমরা চাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। যদি মৃত্যুর জন্য কারও দায় থাকে, তাহলে যেন শাস্তি দেওয়া হয়।’

সারা বাংলা

 

Exit mobile version