Site icon অবিশ্বাস

চট্টগ্রামে সাদা পোশাকে পুলিশের অভিযানের পর হাসপাতালে মা-বোন, কিশোরের ‘আত্মহত্যা’

চট্টগ্রামে রাতে সাদা পোশাকে পুলিশের অভিযানের সময় ধস্তাধস্তিতে বোন আহত হয়ে মাসহ হাসপাতালে যাওয়ার ঘটনার পর বাসা থেকে এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

 

মৃত সালমান ইসলাম মারুফ স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। ডবলমুরিং থানার বাদামতলীর বড় মসজিদ গলিতে তাদের বাসা।

১৬ জুলাই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বড় মসজিদ গলিতে এই ঘটনার পর স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে সাদা পোশাকে অভিযানে যাওয়া ডবলমুরিং থানার এসআই হেলাল উদ্দিনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

মৃতের স্বজন ও স্থানীয়দের ভাষ্য, এসআই হেলাল দুই সোর্সকে সঙ্গে নিয়ে মারুফকে মারধর করে, তার কাছ থেকে টাকা দাবি করে এবং তাকে আটকের চেষ্টা করে। তখন তার পরিবারের সদস্যরা বাধা দেয়। ধস্তাধস্তিতে তার বোন আহত হলে তাকে মাসহ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর গভীর রাতে বাসা থেকে মারুফের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

কী অভিযোগে ওই কিশোরকে আটকে অভিযান চালানো হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল কিনা সেবিষয়ে পুলিশের কোনো ভাষ্য পাওয়া যায়নি।

মারুফের ফুফাত বোনের স্বামী আবু তালেব  বলেন, কিছুদিন আগে মারুফের বাসা থেকে সাইকেল ও মোবাইল ফোন চুরি হয়েছিল। গতকাল সন্ধ্যায় দুই লোক গিয়ে মারুফের বাসায় উঁকি দিচ্ছিলেন। এসময় মারুফ তাদের ‘চোর চোর’ বলে ধরে ফেলেন।

“তখন এসআই হেলাল পুলিশের লোক পরিচয় দিয়ে মারুফকে মারধর করে এবং থানায় ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা এবং টাকা দাবি করে। মারুফের মা ও বোন পুলিশকে বাধা দেয়।”

তালেব বলেন, “যে দুই জন বাসায় উঁকি দিয়েছেন, তারা নিজেদের পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচয় দেন বলে শুনেছি। আর তাদের সাথে থাকা এসআই হেলাল ছিলেন সাদা পোশাকে।”

ঘটনায় প্রত্যাহার হওয়া এসআই হেলালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে কল করে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।

তবে এসআই হেলাল কী অভিযোগে সেখানে অভিযানে গিয়েছিলেন তা ‘তদন্তসাপেক্ষ’ বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) ফারুক উল হক।

তিনি জানান, রাতে এসআই হেলাল মারুফের বাসায় গিয়েছিল অভিযানে। এসময় তার সাথে পুলিশের উত্তেজনা হয়। পুলিশ মারুফকে নিয়ে আসার চেষ্টা করলে তার দুই বোন ও মা পুলিশের কাছ থেকে মারুফকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।

“দুই পক্ষের টানাহেঁচড়ার মধ্যে মারুফের এক বোন মাটিতে পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। এসময় পুলিশ চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় তার মাকেও যেতে বলে। মা ও বোনকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে গেছে মনে করে বাসায় ঢুকে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করে।”

স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে এসআই হেলালকে ক্লোজড করা হয়েছে উপ-কমিশনার (পশ্চিম) কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে সহকারী কমিশনার (ডবলমুরিং জোন) ও ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে।

কমিটিকে শুক্রবার বিকাল ৫টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানান উপ-কমিশনার ফারুক উল হক জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

Exit mobile version