Site icon অবিশ্বাস

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে তরুণীকে ধর্ষণ

ফরিদগঞ্জ উপজেলা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক তরুণী। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আর অব্যবস্থাপনার জন্য এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন সেবা নিতে আসা রোগী ও স্থানীয়রা।

জানা যায়, বুধবার রাত প্রায় ২টায় শারীরিক অসুস্থতা দেখিয়ে ভর্তি হন ২০ বছরের তরুণী।

প্রত্যক্ষদর্শী আয়শা আক্তার ও ফয়সাল জানান, ধর্ষণের শিকার মেয়েটির সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। তারা বলেন- রাত ১২টার দিকে মেয়েটি হাসপাতালে গেলে মাস্ক পরা ওই যুবকটি তাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। মেয়েটি ভেবেছে সে হাসপাতালেরই লোক। লোকটি মেয়ের সঙ্গে এমন ব্যবহার করেছে যা দেখে সবার মনে হয়েছে তার নিকটাত্মীয়।

যুবকটি রাত গভীর হলে রুমের লাইট এবং দরজা বন্ধ করে। ওই সময় তারাসহ মহিলা ওয়ার্ডে মাত্র ৩ জন রোগী ছিল। আনুমানিক রাত ৪টার দিকে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। মেয়েটির চেতনা ফিরে আসার পর তার ডাক চিৎকারে অন্যরা যখন ঘুম থেকে জেগে যায় তখন যুবকটি পালিয়ে যায়।

সকালে তরুণীটি ফরিদগঞ্জ থানায় ফোন দিয়ে বিষয়টি পুলিশ এবং সাংবাদিকদের জানান। ধারণা করা হচ্ছে মেয়েটিকে চেতনানাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়েছে।

গভীর রাতে মহিলা ওয়ার্ডে পুরুষ লোক থাকার বিধিনিষেধ থাকলেও কর্তব্যরত নার্স অথবা ওয়ার্ডবয়ের অবহেলায় যুবকটি সেখানে গভীর রাত পর্যন্ত ছিল। ওই রাতে দায়িত্বরত ওয়ার্ডবয় ছিলেন মনসুর আহম্মেদ এবং নার্স ছিলেন উম্মে আতিয়া। হাসপাতালে গিয়ে এই দুজনকে পাওয়া যায়নি।

মোবাইল ফোনে নার্স উম্মে আতিয়া ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, পুরুষটি মেয়েটির সঙ্গে এমন আচরণ করেছে তাতে সন্দেহ করার কোনো কারণ ছিল না। একজন আত্মীয়ের মতো তাকে ধরেছে- তখন মেয়েটি কিছুই বলেনি।

এ বিষয়ে হাসপাতালের আরএমও ডা. মো.কামরুল হাসান বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই তরুণীর কোনো অভিযোগ না থাকায় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শহীদ হোসেন বলেন, ওই রাতে হাসপাতাল থেকে ভিকটিম মেয়েটি আমাদের ফোন করে বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে আমাদের ফোর্স হাসপাতালে গিয়ে খোঁজখবর নেয়ে। সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করলেও লিখিত অভিযোগ না থাকায় আমরা কোনো ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারিনি।

এ বিষয়ে ইউএইচও মো. আশরাফ আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, এ ধরনের ঘটনা হাসপাতালে ঘটেনি। তবে এ ঘটনাটি শুনেছি। পরদিন মেয়েটি চলে যেতে চাইলে আমরা মেয়েটিকে যেতে দেইনি। পরবর্তীতে মেয়েটি যেহেতু অভিযোগ দেয়নি, তাই তাকে চলে যেতে দেই। পুলিশ ভিডিও ফুটেজ দেখে লোকটিকে চিহ্নিত করেছে।
সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। জেনে তারপর বলতে পারব।

যুগান্তর

Exit mobile version