Site icon অবিশ্বাস

চৌমুহননীতে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর পুজামণ্ডপের ঘাট দখল স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম ক্ষোভ, নিন্দা ও উত্তেজনা

বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী কলেজ রোডে ঐতিহ্যবাহী বেগম গঞ্জের জমিদার-এর খোদবাড়ির সামনে পূজা মণ্ডপের ঘাট দখলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম ক্ষোভ, নিন্দা ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। জানা গেছে, গত ২৯ ডিসেম্বর গভীর রাতে এক দল সন্ত্রাসী হিন্দু সম্প্রদায়ের মহগুরু লোকনাথ ব্রহ্মচারীর পূজা মণ্ডপের নৌকা ঘাট ও প্রতিমা বিসর্জন স্থানটি জবর দখল করে। অভিযোগে জানা গেছে, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের একমাত্র ঐতিহ্যবাহী জমিদার চৌমুহনী বাণিজ্য কেন্দ্রের মহেশগঞ্জ বাজারের মালিক, চৌমুহনী এসএ কলেজ মদন মোহন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও গণিপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মদন মোহন সাহা, প্রসন্ন রায় চৌধুরী, কুনীরাম সাহা ১৯৪০ সালে প্রায় ১’শ একর ভূমি প্রতিষ্ঠান গুলোর জন্য দানপত্র করেন। বর্তমানে দাতাদের বংশধরদের মধ্যেও প্রায় আড়াই শতাধিক লোকের বসবাস খোদ বাড়িতে। বাড়ির সামনে রয়েছে পূজা উৎসবের জন্য বড় একটি মাঠ। আর সেই মাঠের পাশেই স্মৃতি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম (উপসনালয়)। প্রতি বছরই এখানে ৮/১০ হাজার লোকের সমাগম ঘটে। আর সেই ভক্তরা বাড়ির সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া চৌমুহনী-ছাতারপাইয়া খালের নৌকা ঘাট দিয়ে উঠে আসে এবং হাজার হাজার লোকের উপস্থিতিতে ওই বাড়ির সামনের জলাশয়ে প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবে হাজার হাজার নারী-পুরুষের প্রতিমা বিসর্জন ও নৌকা যোগে আসা-যাওয়ার একমাত্র ঘাট ক্রমাগত জবরদখলে চলে যাচ্ছে। একশ্রেনীর সরকারী কর্মকর্তা ও পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় ব্যক্তি মালিকানাধীন ও সরকারী ভূমি, সড়ক ও জনপদ বিভাগের ভূমি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভূমি, রেলওয়ের ভুমিগুলো দিনের পর দিন গ্রাস করে নিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। এই গুরুত্বপূর্ণ নৌকা ঘাটটিও গ্রাস করতে করতে এক পর্যায়ে বাকিটুকুও গত ২৯ ডিসেম্বর গভীর রাতে সন্ত্রাসীরা পাকা খুঁটি দিয়ে দখলে নিয়ে নেয়। দখলকারীরা উক্ত নৌকা ঘাটটি লীজ নিয়েছে বলে জানায়। এ নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে বেগমগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এদিকে অভিযোগের পর ওই সন্ত্রাসীরা সংখ্যালঘুদের মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে বলে জানা গেছে। যে কোনও মুহূর্তে আইনশৃংখলার চরম অবনতির আশংকা রয়েছে। এ ব্যাপারে সংখ্যালঘুরা প্রধানমন্ত্রীর ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

আজকের কাগজ, ১১ জানুয়ারি ২০০২

Exit mobile version