Site icon অবিশ্বাস

ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে রাবির টিএসসিসি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

১০ বছর আগে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উপপরিচালক (সংগীত) রকিবুল হাসান রবিনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ১৪ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে রাজশাহী নগরের মতিহার থানায় মামলাটি করেন ওই ছাত্রীর বাবা।

 

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এস এম সিদ্দিকুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে নারী শিশু নির্যাতন আইনে মামলাটি করেছেন। এ বিষয়ে তাঁরা তদন্ত করছেন।

এর আগে গত ২৩ আগস্ট অভিযোগকারী ওই ছাত্রীর স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে জমা দেন তাঁর বাবা ও মা। একই অভিযোগ তাঁরা জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের কাছে দেন। সেই অভিযোগ পেয়ে গত ৩১ আগস্ট রবিনকে জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ঘটনাটি তদন্তে সংগঠনটির পক্ষ থেকে একজনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। দ্রুত অভিযোগের তদন্ত করে ওই কর্মকর্তার শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসে মানববন্ধনও হয়েছে।

রকিবুল হাসান জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসির একসময়ের সংগীত প্রশিক্ষক রকিবুল হাসান বর্তমানে সেখানেই উপপরিচালক (সংগীত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

মামলার বিষয়ে জানতে রকিবুল হাসানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে এর আগে অভিযোগ ওঠার পর রকিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ছোটকাল থেকে দীর্ঘদিন তাঁকে গান শিখিয়েছেন তিনি। এ ধরনের অভিযোগ তখন তোলেননি কেউ। আজ এত বছর পর কেন? এ ঘটনায় তিনি ২৩ আগস্ট নগরের মতিহার থানায় একটি জিডি করেছেন। এতে বলেছেন, শুধু সাংগঠনিক দ্বন্দ্বের কারণে ওই ছাত্রীর বাবা তাঁর বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র ও কুৎসা রটিয়ে তাঁকে হেয়প্রতিপন্ন করছেন।

মামলার বাদী জানান, তাঁদের বাড়ি রাজশাহীতেই। তাঁর মেয়ে ২০১০ সালে ১২ বছর বয়সে রকিবুল হাসানের কাছে গান শিখতেন। তিনি বাড়িতে এসে গান শেখাতেন। রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের অনুশীলনও তাঁদের বাড়িতে হতো। এভাবে রকিবুল তাঁদের আস্থাভাজন ও বিশ্বস্ত হয়ে ওঠেন। এ সুযোগে তিনি তাঁর মেয়ের ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছেন। তখন ভয়ভীতি দেখিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তাঁর মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন রবিন।

এত দিন পর আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে মেয়েটির বাবা বলেন, সে সময়ে তাঁর মেয়ে ছোট থাকায় এ বিষয়ে তাঁদের বলতে সাহস পাননি এবং সামাজিক সমর্থন না পাওয়ার আশঙ্কায় সে সময় ঘটনাটি প্রকাশও করতে পারেননি। তিনি জানান, তাঁর মেয়ে দেশের বাইরে লেখাপড়া করেন। সম্প্রতি দেশে ফিরে জানতে পেরেছেন রকিবুল এখনও একইভাবে আরও অনেকের সঙ্গে এ ধরনের কর্মকাণ্ড করছেন। এরপর তিনি বিষয়টি তাঁদের (বাবা-মা) জানান। আর কারও যেন ক্ষতি না করতে পারেন তিনি এবং এ অন্যায়ের প্রতিবাদ করা জরুরি, সে কারণে তাঁর মেয়ে এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো অভিযোগ ২ সেপ্টেম্বর উপাচার্য দপ্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ সেলে পাঠানো হয়। পরে গত বুধবার এ বিষয়ে প্রথম সভা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেলের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রেজিনা লাজ।

দৈনিক প্রথম আলো

Exit mobile version