Site icon অবিশ্বাস

ছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও নিয়ে আত্মগোপনে যায় মামুন

আশুলিয়ার একটি মহিলা মাদ্রাসার ছাত্রীকে (৯) নিজ কক্ষে ধর্ষণের পর আত্মগোপনে চলে যায় একই মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪২)। ধর্ষণের পরে তা ভিডিও করে রেখে মামুন সেই শিক্ষার্থীকে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাব-১ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।

বাস্তবতার বাইরে ফেসবুকে ‘এইচ এম আব্দুল্লাহ আল মামুন’ নামে নিজেকে ঢাকা কলেজের বর্তমান ছাত্র পরিচয় দিয়ে আসছিল ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত ওই মাদ্রাসা শিক্ষক। গত ২৭ জানুয়ারি আশুলিয়ার দোসাইদ এলাকার তারিমুল কুরআন মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক মামুন নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে একই মাদ্রাসার এক শিশুকে ধর্ষণ করে। এর পরই আত্মগোপনে চলে যায় মামুন। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি মামলা হলে র‌্যাব-১ ছায়া তদন্ত শুরু করে।

বৃস্পতিবার রাতে ব্রাহ্মমবাড়ীয়ার বাঞ্ছারামপুর এলাকায় র‌্যাব-১ এর একটি টিম অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার  করে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বলেন, নরসিংদীর বাসীন্দা মামুন বিগত ১৮ বছর ধরে আশুলিয়ার বাইতুল মাহমুদ জামে মসজিদে ইমামতি করতো এবং ২০০৬ সাল থেকে তারিমুল কুরআন মহিলা মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করে। মামুনের স্ত্রীও একই মাদ্রাসার শিক্ষক এবং তাদের ৪ সন্তান রয়েছে। ঘটনার কিছুদিন আগে তার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি যায়। ঘটনার দিন সকালে মক্তবের পড়া শেষে ভিকটিম শিশুটিকে ঝাড়ু দেওয়ার কথা বলে নিজের কক্ষে নিয়ে যায়। ঘরে কোনো লোক না থাকায় মোবাইলে শিক্ষার্থীর নগ্ন ছবি ধারণ করে আব্দুলল্লাহ আল মামুন।

ওই নগ্ন ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এরপর ধর্ষণের ছবি আব্দুল্লাহ আল মামুন মোবাইলে ধারণ করে। আর ওই ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় মামুনের সহযোগী জালাল মাদবর। শিশুটি এ বিষয়ে কাউকে কিছু বললে খুন করে লাশ গুম করে ফেলার হুমকিও দেয় মামুন। পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে শিশুটি তার বাবা-মাকে জানায় এবং তাকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এ বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে আত্মগোপনে চলে যায় ধর্ষক মামুন।

র‌্যাব-১ অধিনায়ক বলেন, আব্দুল্লাহ আল মামুনের একটি ফেসবুক এ্যাকাউন্ট রয়েছে। যেখানে সে নিজেকে ঢাকা কলেজের ছাত্র পরিচয় দিয়ে আসছিল। তার এ্যাকাউন্টে বন্ধুর সংখ্যা ২ হাজারেরও বেশি। মামুনের নিজ এলাকাতেও অনেক কুকীর্তির ঘটনা রয়েছে। সে নিজে একজন দক্ষ অভিনেতাও বটে। গ্রেফতার  এড়াতে নানা তাল বাহানা শুরু করে। পরে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ রিজাউল হক দিপু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ধর্ষণকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও তার মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন এলাকার অভিযান চলছে। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা  দায়ের করা হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন

Exit mobile version