জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতাকর্মী জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে এ ঘটনার ক্ষোভ জানিয়েছে জাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। পাশাপাশি দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভিযোগ তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে সংগঠন দুটি।
রবিবার (১১ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্র ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তুষার ধর ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন, ‘একজন নারীর পোশাক নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা নিঃসন্দেহে নিচু মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই জন ছাত্রের কাছে আরেকজন ছাত্রীর লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও গর্হিত কাজ। আমরা জানতে পেরেছি, অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি কেবল নারী শিক্ষার্থীর পোশাক নিয়ে মন্তব্য করেই ক্ষান্ত হয়নি, উপরন্তু এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে অভিযোগকারী ও তার বন্ধুকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এধরনের নিপীড়ক ও সন্ত্রাসী মানসিকতা পোষণকারী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করার কোনও বিকল্প নেই।”
এদিকে একই দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) ভুক্তভোগী প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের এক ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন ও মার্কেটিং বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। দেলোয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন সংসদের সহ-সভাপতি এবং শাখা ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক ও আজাদ ছাত্রলীগের কর্মী। তারা দু’জনেই মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র।
অভিযোগকারী ছাত্রী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) জরুরি প্রয়োজনে আমি ও আমার এক বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের দিকে যাওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌরঙ্গী এলাকায় দেলোয়ার এবং আজাদ পথরোধ করে এবং আমার পোশাক নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করে। আমি ও আমার বন্ধু এর প্রতিবাদ করি। এরপর চলে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল দিয়ে আবার পথরোধ করে এবং দ্বিতীয়বারও আমার পোশাক নিয়ে অশ্লীল কথা বলে। পরে রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের কাছে অভিযোগ করি।’
তবে অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ওইদিন রাতে এরকম কোনও ঘটনা ঘটেনি, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত আবুল কালাম আজাদের মোবাইলফোনে কয়েকবার কল করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ. স. ম. ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, অভিযোগটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ আছে। তাই এই মুহূর্তে অভিযোগটি নিয়ে কাজ করতে পারছি না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় খুললে আমরা এটি নিয়ে কাজ করবো এবং অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী উভয়ের বক্তব্য শুনবো।