Site icon অবিশ্বাস

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ধর্ষণের ছবি তুলে স্কুলছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে বন্ধুদের সহায়তায় ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করে ফের ধর্ষণ করার অপরাধে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলায় আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

 

গ্রেফতারকৃতরা হলো- উপজেলার আলমনগর ইউনিয়নের মাদারজানী গ্রামের সেলিম হোসেন সোনার ছেলে সিফাত (১৪), মোন্নাফ মিয়ার ছেলে রবিউল ইসলাম রনি (১৪) ও নবগ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে ইমরান (১৩)।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সনাতন ধর্মের ওই ছাত্রীকে স্কুলে যাতায়াতের পথে ওই তিন বন্ধু মিলে বারবার প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করত। তাদের প্রস্তাবে সে রাজি না হওয়ায় ২৬ মে রবিউল ও ইমরানের সহায়তায় মেয়েটিকে বাড়ির পাশে নিয়ে প্রথমবার সিফাত জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ইমরান মোবাইলে ধর্ষণের ছবি তুলে।

এরপর ধর্ষিতাকে সেই ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে গত ৭ আগস্ট রাতে পূর্বের কায়দায় সিফাতের উপস্থিতিতে বাড়ির পাশে নিয়ে ইমরান দ্বিতীয়বার তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় রবিউল ইসলাম রনি ধর্ষণের সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে।

ঘটনাটি জানাজানি হলে আলমনগর ইউনিয়নের মাদারজানী গ্রামের ইউপি সদস্য শেখ ফরিদের বাড়িতে আপস-মীমাংসার জন্য স্থানীয় মাতবর মাজম খাঁ ও লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে কয়েক দফা সালিশ বৈঠক বসে। সেখানে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার প্রাথমিক চেষ্টা চালায়।

ইমরান টাকা দিতে অস্বীকার করায় সালিশে তার সঙ্গে ওই ছাত্রীর বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। অপর দুজন চাহিদামতো টাকা বিনিময়ের শর্তে মুক্তি পায়। কিন্তু মেয়েপক্ষ মুসলিম ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দিতে অসম্মতি জানায় এবং চাপের মুখে ভয়ে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে সরেজমিন ওই গ্রামে যান। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে সালিশে উপস্থিত লোকজন পালিয়ে যান। সংবাদকর্মীরা বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মোমেন ও থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পরে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা নেন।

গোপালপুর থানার ওসি মোশাররফ হোসেন জানান, মেয়ের বাবা বাদী হয়ে বুধবার রাতে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেছেন। রাতেই অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে অভিযুক্ত তিন আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য মেয়েটিকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

যুগান্তর

Exit mobile version