Site icon অবিশ্বাস

টাঙ্গাইলে পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে নির্যাতন করে টাকা আদায়ের অভিযোগ

টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে এক পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে থানা হাজতে তিনদিন আটক রেখে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইল পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের (পিটিসি) পুলিশ সুপার আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তিনি জোর করে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছে পরিচ্ছন্নতা কর্মী মো. ফরিদ মিয়া।

 

এ ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। অভিযোগ জানানোর পর পুলিশ সুপার আব্দুর রহিম বিভিন্নভাবে তাকে হুমকি দিয়ে আসছে বলে দাবি করেছেন ফরিদ মিয়া।
শনিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘গত ১৩ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় এসপি স্যারের বাসায় কাজ শুরু করি। বেলা ১টার দিকে কাজ শেষ করে ফিরে আসি। এরপর বিকাল ৪টার দিকে এসপি স্যারের অর্ডারলি সাহেব আলী আমাকে ফোন নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে স্যারের বাংলোতে যেতে বলেন। ৫ মিনিট এর মধ্যে এসপি স্যারও একই নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে আমাকে বাংলোতে যেতে বলেন। আমি সেখানে গেলে এসপি স্যার তার বাংলোর দোতলার একটি রুমে ঢুকিয়ে দরজা আটকিয়ে দেন। তিনি বলেন, তার ১ লাখ টাকা চুরি হয়েছে এবং এই টাকা আমি চুরি করেছি। আমি অস্বীকার করলে তিনি আমাকে মারধর করেন। এরপর তিনি থানায় খবর দিলে আনুমানিক বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশের এসআই আবুল বাশার মোল্লা আমাকে বাংলোতে জেরা করে এবং মারধর করে। পরে আমাকে মির্জাপুর খানায় নিয়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘থানায় নিয়ে আমাকে চোখ এবং হাত বেঁধে থানায় অমানুষিক নির্যাতন ও লাঠি পেটা করতে থাকে। তখন এসআই বাশার আমাকে বলে তুমি খারাপ ভাবে ফেঁসে গেছে, তুমি টাকা না নিলেও ১ লাখ টাকা দিতে হবে। না দিলে আমাকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়। খবর পেয়ে আমার এলাকার ভাই, চাচা, বউ, ভাতিজা থানায় আমার সঙ্গে দেখা করতে যায়। অত্যাচারের ভয়ে যেভাবেই হোক টাকা জোগাড় করতে বলি তাদের। আমার আত্মীয়রা টাকা জোগাড় করতে না পারলে পরের দিনও তারা আমাকে আবার মারতে থাকে। এভাবে ৩ দিন থানা হাজতে রাখার পর ১৫ মার্চ বিকাল ৫টার দিকে এসআই বাশার আমাকে মির্জাপুর থানা থেকে টাঙ্গাইল পিটিসির একাডেমিক ভবনে এসপি স্যারের রুমে নিয়ে যায়। সেখানে আমার মামা আনোয়ারসহ পরিবারের সদস্যরা ৭০ হাজার টাকা এসপি স্যারের হাতে দেয়। তারপর আমাকে ছেড়ে দেয়।
এসপির বাংলো থেকে টাকা চুরির সঙ্গে কোনও সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে ফরিদ মিয়া বলেন, ‘আমি চুরি করিনি। আমার কাছ থেকে জোর করে টাকা নিছে। ক্ষমতার জোরে সব করছে। আমি পুলিশ সদর দফতরে অভিযোগ করেছি। এরপর থেকে এসপি স্যার ও এসআই বাশারের লোকজন নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার কথা বলছে।’
অভিযোগের বিষয়ে টাঙ্গাইল পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের পুলিশ সুপার আব্দুর রহমান শাহ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য মোবাইল ফোনে চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বাংলা ট্রিবিউন

Exit mobile version