Site icon অবিশ্বাস

টেকনাফেও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস

কক্সবাজারে রামু ও উখিয়ার বৌদ্ধবসতিতে হামলার পর টেকনাফ উপজেলার কয়েকটি বৌদ্ধ ও হিন্দু বাড়িতে ভাংচুর করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

 

কক্সবাজারে রামু ও উখিয়ার বৌদ্ধবসতিতে হামলার পর টেকনাফ উপজেলার কয়েকটি বৌদ্ধ ও হিন্দু বাড়িতে ভাংচুর করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

৩০ সেপ্টেম্বর রোববার সন্ধ্যায় প্রায় হাজারখানেক লোক মিছিল নিয়ে গিয়ে টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকা লাতুরিখোলায় অন্তত পাঁচটি বাড়িতে হামলায় চালায় বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১৫ রাউন্ড গুলি ছুঁড়লে ৬/৭ ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় চেয়ারম্যান-পুলিশ-সংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়।

ফেইসবুকে কোরআন শরীফ অবমাননার অভিযোগে শনিবার রাতে কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ বসতির মন্দির ও ঘরবাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর চালায় ধর্র্মীয় উগ্রপন্থীরা।

রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত চলা এই হামলায় রামু উপজেলার ৭টি বৌদ্ধ মন্দির, প্রায় ৩০টি বাড়ি ও দোকান পুড়িয়ে দেয়া হয়। হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয় আরো শতাধিক বাড়ি ও দোকানে। রোববার সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তরা উখিয়ার কয়েকটি বৌদ্ধ মন্দিরেও হামলা চালায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার হোয়াইক্যং লম্বাবিল এলাকা থেকে কয়েকশ লোক ফেইসবুকে কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি প্রায় দেড় কিলোমিটার উত্তরে হোয়াইক্যং স্টেশনে পৌঁছলে সেখান থেকে আরো লোক তাতে যোগ দেয়।

প্রায় হাজার খানেক লোকের মিছিলটি হঠাৎ পশ্চিম দিকে মোড় নিয়ে প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার ভিতরে গহীন পাহাড়ি এলাকার লাতুরীখোলায় পাশাপাশি অবস্থিত একটি বৌদ্ধবসতি ও চারটি হিন্দু বাড়িতে ভাংচুর ও আগুন লাগিয়ে দেয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) বখতিয়ার আহমেদ জানান, খবর পেয়ে তার নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ এক পর্যায়ে গুলি ছোঁড়ে। এ সময় কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়।

“এতে লোকজন আরো উত্তেজিত হয়ে টেকনাফ-কক্সাবাজার সড়কে ব্যারিকেড দিলে সড়কের উভয় পাশে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, তিন পুলিশ কনস্টেবল, সংবাদকর্মীসহ ২০ জন আহত হন।”

গুলিবিদ্ধ আমতলীর আবুল কাশেমের ছেলে মো. জাহেদ (১৮), লম্বাবিলের মো. জালাল (১৬), একই এলাকার জসিম উদ্দিনের ছেলে মো. করিম (১৮), আবদুল হাকিমের ছেলে মোস্তাক (২৫), মো. আলমের শিশু পুত্র পুতিয়া (৮), নুরুল আলমের ছেলে মো. হোছন (১৮), নুরুল ইসলামের ছেলে হাছান আলীকে (১৮) বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান এসআই।

টেকনাফ থানার ওসি মোহাম্মদ ফরহাদ  জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

তবে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, এলাকায় উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

Exit mobile version