Site icon অবিশ্বাস

ঠাকুরগাঁওয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৩ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা

ঠাকুরগাঁওয়ে তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

 

১০ জুলাই শনিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. নাদিরুল আজিজ বাদি হয়ে এই মামলা করেন।

তিন সাংবাদিক হলেন- জাগোনিউজ২৪.কমের ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি তানভীর হাসান তানু, বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি আব্দুল লতিফ লিটু ও নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের জেলা প্রতিনিধি রহিম শুভ।

ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে বরাদ্দের বিপরীতে রোগীর খাবার পরিবেশনে অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে এ মামলা করা হয়।

জেলার সাংবাদিকরা জানান, দায়ের হওয়া মামলার বিষয়ে খবর নিতে গেলে ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশ রাত ৮টায় সাংবাদিক তানভীর হাসান তানুকে গ্রেফতার করে। তিনি এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(১)(ক) ২৫(১)(খ) ২৯(১)/৩১(১)/৩৫(১) ধারায় নাদিরুল আজিজের বিরুদ্ধে করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ০৫ জুলাই জাগোনিউজ২৪.কম, নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম ও বাংলাদেশ প্রতিদিনে করোনা রোগীর খাবার নিয়ে ‘মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট, জনরোষ সৃষ্টিকারী মানহানিকর’ সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম বলেন, গত ০৯ জুলাই আমরা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের একটি মামলার এজাহার পাই। শনিবার রাতে আসামিকে থানা চত্বরে দেখতে পেয়ে গ্রেফতার করা হয়।

এদিকে, তানুকে গ্রেফতারের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার মুক্তি দাবিতে এবং মিথ্যা মামলার প্রত্যাহার চেয়ে জেলা প্রেস ক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ করেন সাংবাদিকরা। তারা তানুর মুক্তি ও সাংবাদিকদের নামে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

সাংবাদিক নেতারা বলেন, অভিযোগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর প্রতিবাদলিপিসহ বিভিন্ন ভাবে অবস্থান ব্যাখ্যা করার সুযোগ আছে। কিন্তু এ ধরনের কোন পন্থায় না গিয়ে সরাসরি সাংবাদিকের নামে মামলা করে তাকে গ্রেফতারের মাধ্যমে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ করা হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী বলেন, একটি সত্য সংবাদ করার পরেই এভাবে মামলা দিয়ে সাংবাদিককে হয়রানি করার মানে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা। মামলা দায়ের ও সাংবাদিককে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই আমি। মামলা প্রত্যাহার করা না হলে এবং গ্রেফতার সাংবাদিককে মুক্তি দেয়া না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি নেয়া হবে।

০৫ জুলাই বিকেলে জাগোনিউজে “দিনে বরাদ্দ ৩০০ হলেও করোনা রোগীদের খাবার দেয়া হচ্ছে ৭০ টাকার!” শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন করোনা রোগীর প্রতিদিনের খাবারের জন্য ৩০০ টাকা সরকারি বরাদ্দ থাকলেও ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে একজন রোগীকে তিন বেলা যে খাবার দেয়া হচ্ছে, তার বাজার মূল্য ৭০-৮০ টাকার বেশি নয়। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফলমূল দেয়ার কথা থাকলেও তা পাচ্ছেন না রোগীরা। ফলে বেশির ভাগ রোগীকেই বাড়ির খাবারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। খাবার সরবরাহে করোনা ইউনিটে দর্শণার্থীর আনাগোনায় সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি বাড়ছে।

অবজারভার

Exit mobile version