Site icon অবিশ্বাস

ডিবি পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে ধরে এনে মুক্তিপণ আদায়, ৬ পুলিশ সদস্য কারাগারে

গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) ছয় সদস্যকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। রবিবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিবলু কুমার দে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

 

নগর পুলিশের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্রটি জানিয়েছে, অভিযুক্ত ছয়জন গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে গত বুধবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে আনোয়ারা থানার পূর্ব বৈরাগ গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নানকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখার পর ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তিনি ছাড়া পান। পরদিন বৃহস্পতিবার আব্দুল মান্নান থানায় মামলা করেন। এরপর তদন্তে নেমে পুলিশ চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) স্পেশাল আর্ম ফোর্স (এসএএফ) শাখার ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করে। পরে রবিবার তাদের আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

নগর পুলিশের জনসংযোগ শাখার দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত উপ কমিশনার শাহ মো. আবদুর রউফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। তদন্তে এই ছয় পুলিশ সদস্যের সম্পৃক্ততা পেয়ে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জড়িত থাকার দায়ে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

তিনি আরও বলেন, অপরাধী যেই হোক ছাড় নেই। এই ছয় পুলিশ সদস্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। তাই তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

কারাগারে পাঠানো ছয় পুলিশ সদস্য হলেন- সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীরের দেহরক্ষী কনস্টেবল মোরশেদ বিল্লাহ, নগর পুলিশের উপকমিশনার গোয়েন্দা (পশ্চিম) মনজুর মোরশেদের দেহরক্ষী কনস্টেবল মো. মাসুদ, নগরের দামপাড়া রিজার্ভ ফোর্স অফিসে কর্মরত কনস্টেবল শাকিল খান ও এস্কান্দর হোসেন, নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার কর্ণফুলী কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম ও নগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর) কর্মরত কনস্টেবল আবদুল নবী।

ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘বুধবার রাত ২টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে সাত-আটজন আমার বাড়িতে এসে আমার ভাই আবদুর নুরকে খোঁজেন। সে বাড়িতে না থাকায় অপহরণকারীরা লুঙ্গি ও স্যান্ডো গেঞ্জি পরা অবস্থায় আমাকেই ধরে নিয়ে যায়। তারা আমাকে ধরে নিয়ে চাতরি রোডের উত্তর দিকে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে আমাকে বাড়িতে ফোন করে ১০ লাখ টাকা এনে দিতে বলে। ‘এত রাতে এত টাকা কোথায় পাবো’- বলার পর আমাকে ২০ মিনিটের মধ্যে তিন লাখ টাকা এনে দিতে বলে। আমি এতে রাজি না হওয়ায় তারা আমার মোবাইল ফোন থেকেই আমার আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপর আমাকে পটিয়া থানার ভেল্লা পাড়া ব্রিজের পূর্ব পাশে কৈয়গ্রাম এলাকায় নিয়ে যায়। এক ঘণ্টা পর আমার ভাইরা ১ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টাকা যোগাড় করে সেখানে যায়। অপহরণকারীরা তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। আমাকে সেখানেই রেখে যায়।

তিনি আরও জানান, অপহরণকারীদের একজনের গায়ের ডিবি লেখা জ্যাকেট ছিল। কথোপকথনের সময় তারা একজনকে মোরশেদ নামে ডাকে। পরে বৃহস্পতিবার তিনি এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেন।

বাংলা ট্রিবিউন

Exit mobile version