বাঙ্গালী হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা কি এবার দেশে অনুষ্ঠিত হবে? পূজার প্রস্তুতি নেয়ার পূর্বমুহূর্তে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর একের পর এক হামলা সর্বোপরি অসংখ্য হিন্দু পরিবার গৃহহীন হওয়ায় এই প্রশ্ন অনেকের মধ্যে দেখা দিয়েছে। আগামী ২২ অক্টোবর থেকে দুর্গাদেবীর ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ হবার কথা। এ জন্য মাস খানেক আগে থেকে প্রস্তুতি নেয়ার প্রয়োজন। প্রস্তুতির প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে অনেক স্থানে প্রতিমা তৈরি হচ্ছিল কিন্তু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অসংখ্য স্থানে প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে। কোথাও কোথাও সন্ত্রাসীদের হামলায় হিন্দুদের অনেকে গৃহহারা হয়েছে। এদের অনেকে প্রানভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। দেশের প্রায় সর্বত্র একই অরাজক অবস্থা বিরাজ করছে। এই অবস্থায় দুর্গাপূজা যথানিয়মে অনুষ্ঠিত হবে কিনা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রায় একই প্রশ্ন তুলেছেন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অনিল নাথ। তিনি বললেন, আজকের এই নিরাপত্তাহীন অবস্থায় আদৌ দুর্গাপূজা এমনকি ঘটপূজা হবে কিনা সন্দেহ দেখা দিয়েছে। এ জন্য আগামী শুক্রবার সকাল ১০টায় দেশের পূজা উদযাপন পরিষদের ৬৪টি জেলা কমিটির কর্মকর্তাদের এক বৈঠক আহবান করা হয়েছে। এই বৈঠকে এ ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। পরিষদের অপর এক কর্মকর্তা কাজল দেবনাথ জানান, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাহীনতায় আমরা সবাই উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় রয়েছি। এ জন্য রাষ্ট্র্রপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ এবং বৃহত্তর দুটি দলের প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা চলছে। তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাত করলে বিষয়টা খোলাসা হতে পারে। বর্তমানে দেশে পৌনে দু’কোটিরও বেশি সংখ্যালঘু রয়েছে। এর মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। দেশে প্রতি বছর গড়ে ১০ হাজার দুর্গাপূজা হয়। এর অধিকাংশ হয় বারোয়ারি ভিত্তিতে।
দৈনিক জনকন্ঠ, ৮ অক্টোবর ২০০১