Site icon অবিশ্বাস

নাটোরে ক্ষমতাসীনদের সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি ‘বিএনপিতে যোগ দিলে সমস্যা থাকবে না’

জেলার বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় সন্ত্রাস, দখল, মারপিট, চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে প্রায় প্রতিদিন। ১ অক্টোবরের নির্বাচনের পর অনেকেই ঘরছাড়া। বাড়ি ফিরতে সাহস পাচ্ছে না, কর্মস্থলে যেতে পারছে না। প্রশাসন নির্বিকার। প্রতিকার পাচ্ছে না মানুষ। উলটো নতুন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে মামলা মোকদ্দমা করলে। যাও দু’একজন সাহস করে মামলা করছে, তা চাপের মুখে তুলে নিতে বাধ্য হচ্ছে। সরকারী দলের নেতারা বলছে, বিএনপিতে যোগ দিলে কোন সমস্যা থাকবে না। পড়ে পড়ে মার খাচ্ছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্তরা। সব দেখে-শুনে নীরবে মার খেয়ে হজম করছে। যাদের সামর্থ আছে শহরে বাড়ি ভাড়া করে থাকছে। লালপুর উপজেলার হাশিমপুর গ্রামের মৃত পঞ্চাননের পুত্র সুবল ও রাধাকান্তের পুত্র যুগল নির্বাচনের পর থেকে বাড়ি ছাড়া। বীরেন প্রামাণিকের পুত্র অভয় ১৬ অক্টোবরের পর থেকে নিঁখোজ। বাগাতিপাড়া থানার পাঁচুরিয়া গ্রামের আদিবাসী স্টিফেন মারাণ্ডির স্ত্রী নীলমনিকে প্রতিবেশী ছাত্রদলের ক্যাডার ফরিদ ও তার অন্য এক সঙ্গী আসাদুল গত ১৯ অক্টোবর ধর্ষণের উদ্দেশ্যে মাঠের মধ্যে টানাহেঁচড়া করে। এ ব্যাপারে বাগাতিপাড়া থানায় নীলমনি নিজেই বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা রুজু করে। এর পর থেকে ওই গ্রামের ২২ঘর আদিবাসী খ্রিস্টান পরিবারের সদস্যরা অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে। পুলিশ আসামীদের ধরছে না। আসামিরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। মাঠেঘাটে যেতে দিচ্ছে না আদিবাসীদের। নাটোর সদর থানার পশ্চিম মাঠনগর গ্রামের জিতেন্দ্রনাথ সাহার কাছে প্রতিবেশী হযরত দলবলসহ ৪ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করলে সন্ত্রাসীরা পুনরায় তাকে গত ৪ অক্টোবর মারপিট করে। বর্তমানে সে নাটোর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জিতেন ও তার স্ত্রী জানায়, ওই দিন সকালে জিতেন সকালের খাবার খাচ্ছিল। তার স্ত্রী, কন্যা ও পুত্র বাড়িতেই ছিল। ওই অবস্থায় একই সন্ত্রাসীরা ভাতের থালা লাথি মেরে ফেলে দিয়ে তাকে আক্রমণ করে। বলে চাঁদা না দিলে মেরে ফেলব। জিতেন বলে, সে পালিয়ে যেতে পারত। কিন্তু যুবতী কন্যার কথা চিন্তা করে পড়ে পড়ে মার খেয়েছে। কারণ তাকে না পেয়ে হয়তো তার কন্যা ও পরিবারের অন্যদের ওপর নির্যাতন করত সন্ত্রাসীরা।

সংবাদ, ১১ নবেম্বর ২০০১

Exit mobile version