Site icon অবিশ্বাস

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেওয়ার পর নারীকে ধর্ষণচেষ্টা

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেওয়ার পর ধর্ষণচেষ্টাকালে ছিনতাইকারীদের চিনে ফেলায় বাকপ্রতিবন্ধী এক নারীকে গলাটিপে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। পরে ওই নারী অভিযোগ দেওয়ার পরও মামলা নিতে পুলিশের উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) সানোয়ার হোসেন অসহযোগীতা করেছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

 

ভুক্তভোগী নারীর বাবা জানান, আমার মেয়ে (৩০) গত ১১ এপ্রিল সকালে হাটাবো থেকে অটোরিকশায় কাঞ্চন ব্রিজ এলাকায় যাচ্ছিল। পথে আমদিয়াকাজিরটেক এলাকায় অজ্ঞাত অটোরকশা চালকের সহযোগীতায় আগে থেকে ওত পেতে থাকা বীরহাটাবো নাগদাপাড়ার ইসলাম উদ্দিনের ছেলে মোগলসহ ৩ জন তার ওপর হামলা চালায়। এ সময় ছিনতাইকারীরা তার (মেয়ে) মুখ বেঁধে রাস্তার পাশে জঙ্গলে নিয়ে যায়। পরে তার গলা থেকে ৭৫ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। তাকে ধর্ষণেরও চেষ্টা করে। এতে বাঁধা দিলে মেয়েকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে ছিনতাইকারীরা এবং গলাটিপে হত্যার চেষ্টা করে

তিনি আরও বলেন, ‘এ সময় আমার মেয়ে জোরে শব্দ করলে বীরহাটাবো গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালেকের ছেলে হালিম ঘটনাস্থলে দৌড়ে যান। তবে ততক্ষণে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। পরে হালিম মিয়া শুধু সলাম উদ্দিনের ছেলে মোগলকে চিনতে পারে। বাকিদের মুখে মাস্ক থাকায় চিনতে পারেনি। মেয়েকে উদ্ধার করে তারা আমাদের জানান। পরে তাকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’

ভুক্তভোগী ওই নারীর ভাই অভিযোগ করেন, ‘আমার বোনের স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেওয়ার পর ধর্ষণ চেষ্টা করা হলেও ভোলাবো তদন্ত কেন্দ্রের দারোগা সানোয়ার হোসেন রহস্যজনক কারণে এ ঘটনার অভিযোগপত্রে ধর্ষণ চেষ্টার কথা লিখতে দেননি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পূর্বশত্রুতা লেখা হয়েছে। আমার পিতা পড়াশোনা জানেন না, তাই বুঝতে পারেননি। ফলে ওই দারোগা আমার বোনের বিচার পেতে সহযোগিতার বদলে নিরুৎসাহিত করছেন। দারোগা আমার মুঠোফোনে কল দিয়ে বলেছেন, আমার বোন বাকপ্রতিবন্ধী। তাই আদালতে স্বাক্ষী দিতে পারবে না, মামলা করে লাভ হবে না। অযথা হয়রানি হবে। তাছাড়া অভিযুক্তদের ধরিয়ে দিতে পারলে মামলা নেওয়া হবে বলে শর্ত জুড়ে দেন।’

তবে অভিযুক্ত এএসআই সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘বাদীপক্ষকে বলেছিলাম, অভিযুক্তদের অবস্থান জানাতে বা ধরিয়ে দিতে। বাদীপক্ষ গরীব, অসহায়। তারা থানা ও আদালতে দৌড়াতে পারবে না ভেবে এ কথা বলেছি। তবে অসহযোগিতা করবো না। অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা করছি। এছাড়া অভিযুক্ত মোগল মিয়া পলাতক থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অভিযুক্ত মোগল ও তার অধীনে একটি চক্র পূর্বাচলে ঘুরতে আসা লোকজনের কাছ থেকে সুযোগ বুঝে টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়। এমন ঘটনা আরও রয়েছে। এছাড়াও তারা এলাকায় মাদকসেবী হিসেবে চিহ্নিত।

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এইচ এম জসিম উদ্দিন বলেন, ‘কোনও পুলিশ সদস্যের বক্তব্য এমন হতে পারে না। ঘটনা তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিবন্ধী ওই নারীর অভিযোগ পেয়েছি। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

বাংলা ট্রিবিউন

Exit mobile version