নৌকায় ভোট দেয়ার অপরাধে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শত শত মানুষকে শরণার্থী হতে হয়েছে। প্রাণের ভয়ে ভিটেমাটি ছেড়ে ভারত ছাড়াও অনেকে নিরাপদ স্থানে পালিয়েছে। সন্ত্রাসীরা বাঁওড়-পুকুরের মাছ ছাড়াও বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে মালামাল লুট করে নিচ্ছে। সন্ত্রাসীদের হামলায় শার্শার বিভিন্ন গ্রামে ৫০/৬০ জন আহত হয়েছে। অনেকে প্রাণ ভয়ে ভারতে পালিয়েছে। এখানে তিনজন সাংবাদিককেও প্রাণণাশের হুমকি দেয়া হয়েছে । এলাকার অনেকে যশোর শহর, নওয়াপাড়া ছাড়াও নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের গ্রামে সন্ত্রাসীরা দিনে-রাতে হামলা চালাচ্ছে। বুরুলি গ্রামের নিহার রঞ্জন,শংকর, হরেন্দ্র, গোপাল, ভেরচির খগেন, মধ্যকুল গ্রামের সরজিত, সাগর, আরকান্দি গ্রামের জয়দেব, অশোক ছাড়াও আরও অনেকে সন্ত্রাসীদের হাতে মার খেয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। যশোর শহরতলীর একটি গ্রামে এদের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। এরা বলেন, একাত্তর সালে যেমন শরণার্থী হয়ে বাড়ি ছেড়েছি, এবারও নৌকায় ভোট দেয়ার অপরাধে আমাদের বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ থানার সর্বত্র সন্ত্রাসীরা রামরাজত্ব কায়েম করেছে। সন্ত্রাসীদের হামলায় এ থানার বাদুরগাছা, মোঙ্গলপোতা, মালিয়াট, একতারপুর গ্রামে কমপক্ষে ১শ’ জন আহত হয়েছে। বাদুরগাছা গ্রামের প্রদীপ, বৈকুন্ঠ, যুধিষ্ঠির , নৃপতি বিশ্বাস, বিবেক বিশ্বাস সহ অনেকেই বাড়ি ছাড়া। তাদেরকে মারপিট করার পাশাপাশি পুকুরে বিষ ঢেলে লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলা হয়েছে। বাড়ি ঘর ভাংচুর করা হয়েছে। এরা যশোর শহরে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে এসেছে। এরা বলেন, সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরছে। তাদেরকে ভারতে চলে যেতে বলেছে। অনেকেই এ কারণে বাড়ীঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। তারা আরও জানায়, তাদের মাহিদিয়া বাঁওড়ের মাছ লুট করে নেয়া হয়েছে। বাঁওড়ে কেউ নামতে পারছে না।
দৈনিক জনকন্ঠ, ৬ অক্টোবর ২০০১