Site icon অবিশ্বাস

পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে থানাহাজতে রক্তাক্ত তরুণ, ‘আত্মহত্যার চেষ্টা’ বলছে পুলিশ

পঞ্চগড়ের আটোয়ারী থানাহাজতে থাকাকালে সাইদুল ইসলাম (২৪) নামের এক তরুণকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ২৯ আগস্ট শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। পরিবার হাজতে নির্যাতনের অভিযোগ তুললেও পুলিশ দাবি করেছে, ওই তরুণ হাজতের লোহার দরজায় মাথা ঠুকে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন।

 

সাইদুল ইসলাম উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের ছোটদাপ এলাকার তফিজ উদ্দিনের ছেলে। বর্তমানে তিনি পুলিশি পাহারায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আটোয়ারী এলাকায় বিভিন্ন চুরির ঘটনায় সন্দেহমূলকভাবে ওই তরুণকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাঁর নামে এর আগে একটি বিদ্যালয়ের ল্যাব থেকে ল্যাপটপ চুরির মামলা রয়েছে। তবে সেই মামলায় তিনি জামিনে আছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২৮ আগস্ট শুক্রবার বিকেলে আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে সাদাপোশাকধারী পুলিশের কয়েক সদস্য তাঁকে থানায় নিয়ে যান। রাতে পরিবারের লোকজন কী অপরাধে তাঁকে ধরে আনা হয়েছে, তা জানতে গেলেও কোনো সদুত্তর পাননি। শনিবার সকাল ১০টার দিকে পরিবারের লোকজন সাইদুলের জন্য থানায় খাবার দিয়ে ফেরার সময় পুলিশের চিৎকার শুনতে পান। তখন পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে গিয়ে সাইদুলকে হাজতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

তাঁর ভাইয়ের নামে আগে একটা মামলা ছিল। কিন্তু তিনি সেই মামলায় জামিনে রয়েছেন। তারপরও তাঁকে কেন ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা জানতে চাইলে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলেছে পুলিশ।

আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার সময় আহত ওই তরুণের মাথার সামনের দিকে (কপালে) আঘাত ছিল। সেখান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। পরে কয়েকটি সেলাই করা হয়েছে। লোহা জাতীয় কোনো কিছুর আঘাতে এমনটা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। বর্তমানে তিনি কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছেন এবং পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সাইদুল ইসলামের বড় বোন জেসমিন আক্তার বলেন, তাঁর ভাইয়ের নামে আগে একটা মামলা ছিল। কিন্তু তিনি সেই মামলায় জামিনে রয়েছেন। তারপরও তাঁকে কেন ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা জানতে চাইলে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলেছে পুলিশ। শনিবার সকালে থানায় গিয়ে দেখেন, হাজতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন তাঁর ভাই। কিন্তু পুলিশ আধা ঘণ্টা পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়েছে। তাঁকে নির্যাতন করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় আমার ভাই কীভাবে রক্তাক্ত হলো?’

আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইজার উদ্দিন বলেন, ওই তরুণের নামে এর আগে একটি ল্যাপটপ চুরির মামলা রয়েছে। সম্প্রতি আটোয়ারী এলাকায় কয়েকটি চুরির ঘটনায় আটক ব্যক্তিদের মাধ্যমে ওই তরুণের নাম এসেছে। এ জন্য তাঁকে আটক করা হয়েছে। শনিবার সকালে তাঁকে আদালতে নেওয়ার প্রস্তুতির সময় তিনি হাজতের লোহার দরজায় মাথা ঠুকে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাঁকে ধরে ফেলে শান্ত করেন এবং হাসপাতালে (স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে) নিয়ে যান। বর্তমানে সেখানে পুলিশি পাহারায় তিনি চিকিৎসাধীন।

প্রথম আলো

Exit mobile version