পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় অবৈধভাবে খাস জমি দখল করে চা বাগান করাসহ ওই জমিতে থাকা কবরস্থান ও শ্মশানঘাট যাওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে মুসলমানরা দাফন ও হিন্দু-খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীরা লাশের সৎকার করতে পারছেন না। রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় নদীতেও যেতে পারছে না গ্রামবাসী। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করেও কোনো প্রতিকার হয়নি। পরে এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগসহ এলাকায় মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা। লিখিত অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের কালিয়ামনি গ্রামে মুসলিম, হিন্দু খ্রীস্টানসহ ২ হাজার পরিবার বসবাস করে। এই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীর তীরবর্তী এলাকায় সরকারি প্রায় ২৫ একর খাস জমি। জমিতে রয়েছে মুসলামনদের কবরস্থান, হিন্দুদের শ্মশান ও খ্রীস্টানদের সমাধি।
দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহসিন উল হক ও তার পরিবারের সদস্য মির্জা, আবু সালেক, আবু তালেব, সালাম, এনামুল, জমিরুল, আনারুল, হামিদুলসহ একদল প্রভাবশালী কিছু সরকারি খাস জমি লিজ নিয়ে পুরোটা দখল করে রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে চা বাগান করেছেন। ফলে কবরস্থান, শ্মশানঘাট ও নদীতে যেতে পারছেন না এলাকাবাসী। প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না তারা। এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন প্রশাসনসহ সরকারের উচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। একই দাবিতে এলাকার বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীসহ সাধারণ মানুষ ভজনপুর-সুকানি বিজিবি ক্যাম্প সড়কে মানববন্ধন করেছেন। স্থানীয় যুবলীগ নেতা প্রদীপ কুমার রায় বলেন, খাস জমিগুলো দখল করে বাঁশ, বাঁশের বেড়া দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। কিছু জমি লিজ নিলেও সরকারের প্রায় ২৫ একর খাস জমি দখলে নিয়ে চা বাগান করেছেন। দখলে বাধা দেয়ায় দখলদাররা আমাদের ওপর হামলা করেছে। তেঁতুলিয়ার দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মহসিন উল হক সরকারি খাস জমি লিজ নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমার পরিবারের সদস্যদেরকে শ্মশানে যাওয়ার জন্য ৫ ফিট রাস্তা ছেড়ে দেয়ার জন্য বলেছি।
তবে কে কতোটুকু জমি লিজ নিয়েছেন, কে কতোটুকু দখলে রেখেছেন তা মাপজোখ করে দেখার জন্য তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ করা হয়েছে। তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, দেবনগড় ইউনিয়নের কালিয়ামনি এলাকার কবরস্থান, শ্মশান ঘাট ও খ্রীস্টানদের সমাধিতে যাওয়ার রাস্তা নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে শুনেছি। সমস্যা নিরসনে উপজেলা প্রশাসনেরর পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে দখলদারদেরকে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। বিনা বাধায় যাতে সকল ধর্মের মানুষ ওই রাস্তা ব্যবহার করতে পারে এজন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।