পাবনার সদর উপজেলা মালিগাছা ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের এক যুবতীকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ধর্ষককে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার কারণে মালিগাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম শরিফসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে ২২ ডিসেম্বর রোববার রাতে পাবনা সদর থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ এরই মধ্যে তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে। জানা গেছে, তালাকপ্রাপ্ত ওই নারী তার শিশুসন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে থেকে পাবনার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। পাশের হেমায়েতপুর ইউনিয়নের আফুরিয়া গ্রামের পাঞ্জাব প্রামাণিকের বখাটে ছেলে ফিরোজ কর্মস্থলে যাওয়ার পথে এ নারীকে কুপ্রস্তাব দিত। এতে ওই নারী রাজি না হওয়ায় গত ২০ ডিসেম্বর রাতে ফিরোজ ও স্থানীয় চেয়ারম্যান শরিফের সন্ত্রাসীরা এ নারীকে ধর্ষণ করে। এ সময় ধর্ষিতার চিৎকারে তার পরিবার ও স্থানীয়রা এগিয়ে এসে ধর্ষক ফিরোজকে আটকে রাখে। পরে চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী ফিরোজকে ওই বাড়ি থেকে ছিনিয়ে নেয়। মেয়েটি উপায় না দেখে ধর্ষক ফিরোজের বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান শরিফ বিচারের আশ্বাস দিয়ে মেয়েটিকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এদিকে বিষয়টি চেয়ারম্যান জানার পর থেকেই ধর্ষক ও তার সঙ্গীদের বাঁচাতে চেষ্টা করতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় ধর্ষককে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করায় ধর্ষিতা ক্ষিপ্ত হয়ে বিচারের দাবিতে গত শনিবার ধর্ষকের বাড়িতে উপস্থিত হন।
এ সময় ধর্ষক ও চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী ধর্ষিতাকে পিটিয়ে জখম করে মৃত ভেবে তার বাড়ির পাশে রাস্তার ওপর ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ধর্ষিতার পিতা নওশের আলী বাদী হয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম শরিফসহ আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০-৩০ জনের বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পাবনা সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ নাসিম আহমেদ বলেন, অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধর্ষিতাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আদালতের নির্দেশে পরবর্তীতে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হবে। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে স্থানীয়রা চেয়ারম্যানসহ তার সহযোগী সন্ত্রাসী বাহিনী ও ধর্ষক ফিরোজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।