Site icon অবিশ্বাস

পূর্ণিমা ও সীতাংশু ভট্টাচার্যের সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে জোট সন্ত্রাসীরা পরিবারটি কার্যত অবরুদ্ধ

চারদলীয় জোট সরকারের সমর্থক সন্ত্রাসীরা এডভোকেট পূর্ণিমা ভট্টাচার্য ও এডভোকেট সীতাংশু ভট্টাচার্যের বেশ কিছু সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে। এখন বিশাল পৈতৃক বসতভিটা দখলের পাঁয়তারা করছে। সীতাংশুর পরিবারটিকে সন্ত্রাসীরা বিগত জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। বসতবাড়ি ছেড়ে দেয়ার জন্য প্রাণনাশ এবং এডভোকেটদ্বয়ের বোনকে ধর্ষণ করার হুমকি দিচ্ছে। রাজশাহী আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এম. ইয়াহিয়া রাজশাহী রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি বরাবর আইনজীবী ওই পরিবারটিকে রক্ষার জন্য লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। ডিআইজিকে দেয়া আবেদনের সঙ্গে সংযোজিত অভিযোগনামায় বলা হয়েছে, রাজশাহী বারের সদস্য এডভোকেট পূর্ণিমা ও নাটোর বারের সদস্য এডভোকেট সীতাংশুর পৈতৃক বাড়ি নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার হরিদাখলশী গ্রামে। সেখানে সীতাংশু ও তার বোন বসবাস করেন। নির্বাচনের পর ১ অক্টোবর গভীর রাতে চারদলীয় জোট সমর্থক সন্ত্রাসীরা হরিদাখলশীর বাড়িতে হানা দেয়। সন্ত্রাসীরা এডভোকেট সীতাংশুকে প্রাণনাশের এবং তার বোনকে ধর্ষণ করার হুমকি দেয়। তারা থানায় কোন মামলা না করার জন্যও হুমকি দেয় সেদিন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পরবর্তীতে সন্ত্রাসীরা এডভোকেট পূর্ণিমা ও সীতাংশুর পৈতৃক বেশ কিছু সম্পত্তি কৌশলে দখল করে নেয়। দখলদার বাহিনী সংশ্লিষ্ট পরিবারটিকে অব্যাহত হুমকির মুখে আইনগত সহযোগিতা গ্রহণ করতে দেয়নি। গত ১ অক্টোবরের নির্বাচনে এডভোকেট সীতাংশু নাটোর-২ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হানিফ আলী শেখের পক্ষে কাজ করেন। এ কারণে চারদলীয় জোট সমর্থক সন্ত্রাসীরা তার কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। ওই টাকা না দেয়ায় সন্ত্রাসীরা তাকে প্রাণনাশ ও বসতভিটা ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। গত ২৪ অক্টোবর রাত সাড়ে দশটায় সন্ত্রাসীরা বাড়িতে আবারও আক্রমণ করে। তারা কাজের ছেলেকে মারধর করে সীতাংশুকে প্রাণনাশের ভয় দেখায়। এসময় তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরদিন ২৫ অক্টোবর স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের উদ্যেগে ঘটনার মীমাংসা করা হয়। অভিযোগমতে, মীমাংসার পরদিন ২৬ অক্টোবর দুপুর আড়াইটার দিকে সন্ত্রাসীরা পুনরায় সীতাংশুর বাড়িতে হামলা চালায়। তারা পারিবারিক পূজামণ্ডপ ভেঙে ফেলে সেখানে কলাগাছ লাগিয়ে দেয়। এ ঘটনার পর থেকে সন্ত্রাসীরা সীতাংশু ও তার যুবতী বোনকে বাড়িতে কার্যত অবরুদ্ধ করে রেখেছে। ভয়ে তারা আইনের আশ্রয় পর্যন্ত নিতে পারেনি। বর্তমানে তারা বন্দি জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। ডিআইজিকে দেয়া লিখিত আবেদনের সঙ্গে সংযোজিত অভিযোগে আরও বলা হয়, স্থানীয় সন্ত্রাসীরা সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় সংখ্যালঘু পরিবারের পৈতৃক বহু সম্পত্তি এর আগে জাল দলিলের মাধ্যমে নিজের নামে করে নিয়েছে, যার মামলা নাটোর কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। বিচারাধীন ওই মামলাগুলো প্রত্যাহার, পৈতৃক ভিটেমাটি ও সম্পত্তি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য সন্ত্রাসীরা হুমকিদান অব্যাহত রেখেছে। সন্ত্রাসীদের মধ্যে বুলু, রউফ, সাদেক, বাবলু, শাহিন, হাসিবুল অন্যতম। ধর্মীয় সংখ্যালঘু এই পরিবারটিকে রক্ষার্থে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার, বিচার ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের হিউম্যান রাইটস ন্ড লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান এম. এ. সালাম তালুকদার গত ৭ মে স্বরাষ্ট্র সচিব বরাবরে আবেদন করেছেন; কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে ধর্মীয় সংখ্যালঘু পরিবারটি চরম আতংকের মধ্যে রয়েছে।

ভোরের কাগজ, ২২ মে ২০০২

Exit mobile version