Site icon অবিশ্বাস

বইমেলায় ‘ধর্মীয় অনুভূতির’ সুরক্ষায় তৎপর থাকবে পুলিশ

গত কয়েক বছরের মত এবারও একুশে বইমেলার স্টলে ‘ধর্মীয় উসকানিমূলক’ বইয়ের বিষয়ে নজরদারির কথা বলেছেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
২১ জানুয়ারি মঙ্গলবার ডিএমপি সদর দপ্তরে একুশে বইমেলার নিরাপত্তা নিয়ে এক সমন্বয় সভায় তিনি বলেন, “ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন বই বইমেলায় থাকতে দেওয়া যাবে না।”

২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে এমনই এক হামলায় নিহত হন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী লেখক অভিজিৎ রায়। ঘাতকদের কোপে আঙ্গুল হারান তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা।

ওই ঘটনার পর থেকে বইমেলায় নিরাপত্তার কড়াকড়ি বাড়ানোর পাশাপাশি বইয়ের বিষয়বস্তুর দিকেও নজরদারিতে নামে পুলিশ।

২০১৬ সালে বইমেলায় আসা ‘ইসলাম বিতর্ক’ নামের একটি বইয়ে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ হানার উপাদান রয়েছে দাবি করে প্রকাশনা সংস্থা ব-দ্বীপের স্টল বন্ধ করে দেয় পুলিশ।

পাশাপাশি ব-দ্বীপের মালিক ও বইটির সম্পাদক শামসুজ্জোহা মানিক, এক বিপণনকর্মী এবং বইটির ছাপাখানার মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়।

মানিকের মুক্তি আন্দোলনে সামনের কাতারে থাকা রবিন আহসানের প্রকাশনা সংস্থা শ্রাবণ প্রকাশনীকে পরের বছর বইমেলায় নিষিদ্ধ করে বাংলা একাডেমি। পরে সমালোচনা-প্রতিবাদের মুখে ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে তারা।

গতবছরও বাংলা একাডেমির সারভেইলেন্স টিম ও পুলিশের গোয়েন্দারা এ বিষয়ে নজরদারি করেন। কোনো স্টলে কী বই প্রকাশ হচ্ছে, সেই খোঁজ খবর নিতে দেখা যায় তাদের।

সমন্বয় সভায় পুলিশ কমিশনার বলেন, “বইমেলা বাংলা একাডেমি আয়োজন করলেও আমরা (পুলিশ) এর একটি অংশ হয়ে গেছি। বইমেলা ঘিরে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

বইপ্রেমীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে সবার সহযোগিতা চেয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলে বাঙালির প্রাণের মেলা সফলভাবে শেষ করতে পারব।”

বাংলা একাডেমির সচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন সভায় জানান, মোট ৫৩৮টি প্রকাশনা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এবারের বইমেলায় অংশ নেবে।

মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে ৪১১টি স্টল। আর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২৭টি স্টল বসবে।

সব মিলিয়ে স্টল থাকবে ৮৭২টি। এছাড়া শিশু চত্বর, মসজিদ, টয়লেট, ফুড পার্ক ও প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র থাকবে বইমেলা প্রাঙ্গণে।

বইমেলায় আসা বই ‘মনিটরিং’ করতে থাকবে ‘মনিটরিং কমিটি’। মেলার নিরাপত্তায় তিনশর বেশি সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে।

বাঁশ ও টিন দিয়ে মেলা প্রাঙ্গণ ঘিরে শক্ত বেষ্টনী দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি বুক স্টলে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোসাম্মৎ জোহরা খাতুন, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল ছাড়াও মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থা ও ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন সমন্বয় সভায়।

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কারণে একুশে বইমেলা এবার এক দিন পিছিয়ে গেছে। ২ ফেব্রুয়ারি বিকালে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করবেন।

বিডি নিউজ

Exit mobile version