Site icon অবিশ্বাস

বগুড়ায় নামযজ্ঞ অনুষ্ঠানে হিন্দু স্বেচ্ছাসেবককে হত্যা, দুইজনের মৃত্যুদণ্ড

বগুড়ার শাজাহানপুরের গণ্ডগ্রাম আদিকালীবাড়ী হরিবাসর প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছাসেবক সনাতন চন্দ্র প্রামাণিককে ছুরিকাঘাতে হত্যা মামলার রায়ে দুইজনের ফাঁসি ও তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। এ ছাড়া প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

 

৯ ফেব্রুয়ারি  মঙ্গলবার দুপুরে প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম ইসরাত জাহান মঙ্গলবার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে আসামীদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন। হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে দুইজনের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত রশিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার গণ্ডগ্রাম দক্ষিণপাড়ার আলমগীর হোসেনের ছেলে নুর ইসলাম বিপুল (২৮) ও সদরের সূত্রাপুর এলাকার মাইনুল হকের ছেলে মো. অরুণ (২৪)। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- গণ্ডগ্রাম দক্ষিণপাড়ার দশিজুল হকের ছেলে রাজিব শেখ ওরফে রাজিব সরকার ওরফে লয়ামিয়া (২৯), একই এলাকার মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে রাফিউল ইসলাম রনি (২৫) ও গণ্ডগ্রাম সারিয়াকান্দিপাড়ার আমিরুল ইসলামের ছেলে আলম প্রামাণিক (২৪)।

প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এপিপি নাসিমুল করিম হলি জানান, গত ২০১৬ সালের ২ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে গণ্ডগ্রাম আদিকালীবাড়ী হরিবাসর প্রাঙ্গণে ২৪ প্রহর নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানে গণ্ডগ্রাম মধ্যপাড়ার সুরত চন্দ্র প্রামাণিকের ছেলে সনাতন চন্দ্র প্রামানিক (৩০) স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে আসামিরা হরিবাসরের পাশে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নারীভক্তদের উত্ত্যক্ত করছিল। তখন স্বেচ্ছাসেবী সনাতন চন্দ্র প্রামানিক প্রতিবাদ করলে তাকে মারপিটের পর পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে পেট থেকে নাড়িভুড়ি বেরিয়ে যায়।

সনাতন চন্দ্র প্রামাণিককে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে পরদিন দুপুরে তিনি মারা যান। এ ব্যাপারে নিহতের বাবা সুরত চন্দ্র প্রামানিক শাজাহানপুর থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর এক শিশুসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। শিশুর মামলা বগুড়ার শিশু আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

এপিপি নাসিমুল করিম হলি আরও জানান, আসামিদের মধ্যে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বিপুল ও অরুণ এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত রনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সাজাপ্রাপ্তদের সকলে আদালতে হাজির ছিলেন। আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নাফ, এমএকে ফজলুল হক, খন্দকার বেলাল ও লয়েজ উদ্দিন মামলা পরিচালনা করেন।

যুগান্তর

Exit mobile version