বগুড়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বী এক তরুণীকে চিংড়ির কারির সঙ্গে গরুর মাংস মিশিয়ে খাওয়ানোর অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২০ মে) বিকেলে শহরে অভিজাত বিপনী বিতান রানার প্লাজা’র ‘সম্পাস ডাইন’ নামে একটি চাইনিজ রেস্তরাঁয় এ ঘটনা ঘটে।
২১ মে শুক্রবার ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তোড়পাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় বগুড়া জেলা ও পৌর পূজা উদযাপন পরিষদ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোট নিন্দা জানিয়েছে।
জানা গেছে, বগুড়া শহরের নবাববাড়ি সড়কে ব্যবসায়ী সাইরুল ইসলামের মালিকানাধীন আধুনিক বিপনী বিতান রানার প্লাজা। সেখানে সম্পাস ডাইন নামে একটি চাইনিজ রেস্তোরাঁয় অভিজাত পরিবারের সদস্যরা খাওয়া-দাওয়া করে থাকেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার সনাতন ধর্মাবলম্বী এক তরুণী বন্ধুদের সঙ্গে ওই রেস্তোরাঁয় খেতে আসেন। তিনি ওয়েটার আনন্দীকে ফ্রাইড রাইস ও চিংড়ি কারির অর্ডার করেন। খাওয়ার সময় হিন্দু তরুণী দেখতে পান চিংড়ির সঙ্গে গরুর মাংস মেশানো হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ওই তরুণী প্রতিবাদ করেন এবং বমি করে ফেলেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, ওই তরুণী কান্নাকাটি করছেন, তিনি সম্পাস ডাইন’এর কর্তৃপক্ষের কাছে তাকে গরুর গোশত খাওয়ানের প্রতিবাদ করেন। তিনি এ ব্যাপারে কৈফিয়ত চান। তখন রেস্তোরাঁর লোকজন বলেন, তারা জানতেন না তিনি (তরুণী) হিন্দু। তারা এ ঘটনায় সঠিক উত্তর দিতে ব্যর্থ হন। তরুণীকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। ঘটনাটির ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে তোলপাড় বৃষ্টি হয়।
বগুড়া পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি পরিমল প্রসাদ রাজ ও সাধারণ সম্পাদক সুজিত কুমার তালুকদার অপর এক বিবৃতিতেও এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোটের সভাপতি প্রদীপ কান্তি দে, সাধারণ সম্পাদক রাজেশ নাহা ও সাংগঠনিক সম্পাদক সেকেন নাহা এক বিবৃতিতে জানান, তাদের বোন একজন অনলাইন ব্যবসায়ী। তিনি বৃহস্পতিবার বিকেলে বগুড়ায় সম্পাস ডাইনে এসে ফ্রাইড রাইস ও চিংড়ি কারি অর্ডার করেন। কিন্তু ওয়েটার তাকে চিংড়ির সঙ্গে গরুর মাংস দেন। হিন্দু মহাজোট পরিবার মনে করে এ ঘটনা শুধু একটি রেস্টুরেন্টের চিত্র নয়; সমগ্র দেশের চিত্র। নেতৃবৃন্দ প্রতিবাদ জানিয়ে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বগুড়া সদর থানার এসআই মঞ্জুরুল হক ভুঞা জানান, ফেসবুকে এক হিন্দু তরুণীকে চিংড়ির তরকারির সঙ্গে গরুর মাংস খাওয়ানোর ভিডিও দেখতে পান। শুক্রবার শহরের রানার প্লাজার ৭ম তলায় সম্পাস ডাইনের ওয়েটার শহরের কলোনী এলাকার আনন্দিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। এছাড়া দুপচাঁচিয়ার ওই তরুণীকেও ডাকা হয়েছে। তারা অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দিলীপ দে জানান, ওই তরুণী ও তার অভিভাবকদের ডেকে আনা হয়েছে। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বৈঠক হবে। তারা মামলা করতে চাইলে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।