Site icon অবিশ্বাস

বাগেরহাটে টিন কেটে বাসায় ঢুকে এনজিও কর্মীকে গণধর্ষণ

সারাদেশে চলমান ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনের মধ্যেই বাগেরহাটের ফকিরহাটে টিনের চাল কেটে ঘরে ঢুকে এনজিও কর্মীকে (২৫) গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে চার যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারী বাদি হয়ে রবিবার (১১ অক্টোবর) ওই চার যুবককে আসামি করে ফকিরহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

 

এর আগে শনিবার গভীর রাতে ফকিরহাট উপজেলার লকপুর ইউনিয়নের জারিয়া মাইটকুমড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন বাগেরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) পংকজ চন্দ্র রায়। খবর পেয়ে ঘটনার দিন রাতেই পুলিশ মামুন শেখ (৩০) নামে এক অভিযুক্তকে ধাওয়া করে আটক করলেও অপর তিন জন পালিয়ে যায় বলে জানান তিনি।

পলাতক এই তিন আসামি হলো – ফকিরহাট উপজেলার পাশ্ববর্তী ছোট খাজুড়া গ্রামের সিরাজ নিকারীর ছেলে ফিরোজ নিকারী (২৯), এইক গ্রামের রাজু (২৫) ও মুসা (২৯)। আসামিরা পেশায় ভ্যানচালক, নির্মাণ শ্রমিক ও কৃষি শ্রমিক বলে পুলিশ জানিয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, কর্মসূত্রে সহকর্মীদের সাথে মাইটকুমড়া গ্রামের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন ওই নারী। শনিবার গভীর রাতে হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায় তার। তিনি বারান্দায় বের হয়ে আসতেই ওই চার যুবক জোরপূর্বক তার ঘরে প্রবেশ করে। এরপর পাশের ঘরে থাকা সহকর্মীর সাথে ওই নারীর অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ তুলে তার গলায় চাকু ধরে এক লাখ টাকা দাবি করে তারা।

এক পর্যায়ে তারা পাশের ঘরের দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে এবং ওই নারীর সহকর্মীকে টর্চলাইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এরপর তারা ওই ব্যক্তিকে ব্যাপক মারধর করে। এ সময় আসামিরা ও নারীকে তার সহকর্মীর কক্ষে নিয়ে জোরপূর্বক মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। পরে ওই নারীকে গণধর্ষণ করে অভিযুক্ত চার যুবক।

এক পর্যায়ে দৌড়ে সেখান থেকে বেরিয়ে ওই নারী চিৎকার করে উঠলে পালিয়ে যায় তারা। যাওয়ার সময় আসামিরা তার ভ্যানিটি ব্যাগে থাকা ১৬ হাজার টাকা, কানের দুল (স্বর্ণের) ও গলার চেইন নিয়ে যায়।

ওই বাড়ির মালিক বিষ্ণু পদ কুন্ডু জানান, ভুক্তভোগী এনজিও কর্মী প্রায় দেড় বছর ধরে তার বাড়ির একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। প্রায় দুই মাস আগে তার বিয়ে হলেও চাকরির কারণে ওই নারী একাই থাকেন এখানে। রাতে চিৎকার শুনে এগিয়ে গেলে তারা কয়েকজন যুবককে দেখতে পান।

বাগেরহাটের এসপি পংকজ চন্দ্র রায় বলেন, “চার যুবক ওই নারী এনজিও কর্মীর ভাড়া বাসার কক্ষে কৌশলে প্রবেশ করে প্রথমে তাকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তারা ওই নারীকে জোরপূর্বক গণধর্ষণ করে।”

তিনি আরও বলেন, “রাতেই খবর পেয়ে টহল পুলিশ ওই এলাকা থেকে মামুন শেখ নামে একজনকে আটক করা হয় এবং তার কাছ থেকে মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ওই ভিডিও জব্দ করা হয়। আটক আসামিকে থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অপর আসামিদের ধরতে চেষ্টা চলছে।”

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির জানান, “রবিবার বিকালে তিন নারী চিকিৎসককে নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন। এক থেকে দুই দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়া হবে।”

ঢাকা ট্রিবিউন

Exit mobile version