Site icon অবিশ্বাস

বেড়া ও সাঁথিয়ায় নির্বাচনের দুই মাস পরও আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি হয়নি এখনো হামলার শিকার হচ্ছে সংখ্যালঘুরা

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দু’মাস পার হয়ে গেলেও বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি। উপজেলাদ্বয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ অব্যাহত থাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নির্বাচনের পর থেকেই বেড়া উপজেলারপৌর শহরসহ হাটুরিয়া, জগন্নাথপুর, পেচাকোলা, মালদহপাড়া, নাকালিয়া, নাটিয়াবাড়ী, টাংবাড়ী, কাশিনাথপুর, নয়াবাড়ী, আমিনপুর, ঘাস আমিনপুর, বাঁধের হাট, কাজীর হাট এবং সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের পুণ্ডুরিয়া, সেতুপাড়া ইউনিয়নের পাগলা হালদারপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সহিংসতার শিকার হয়েছে এবং এখনো অনেক স্থানে সন্ত্রাসী হামলা অব্যাহত রয়েছে। আর এ সকল সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় অনেকে আইনের আশ্রয় নিতে গিয়েও পড়েছে চরম বিপাকে। মামলা তুলে নেয়ার জন্য বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। ফলে অনেকেই সন্ত্রাসী হামলার শিকার হলেও ভয়ে মুখ খুলছে না এবং আইনের আশ্রয় নিতে সাহস পাচ্ছে না। নির্বাচনের পর ৭ অক্টোবর হাটুরিয়া জগন্নাথপুর গ্রামে একাধিক বাড়িতে লুটপাট-ভাংচুর ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। জগন্নাথপুর গ্রামের অশ্বিনী কুমার সূত্রধর তার বাড়িতে লুটপাটের ঘটনায় বেড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও তাকে থানা থেকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। ৯ অক্টোবর উপজেলার টাংবাড়ী গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়। একইদিন সাঁথিয়া উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের পাগলা হালদারপাড়া গ্রামে ২০জন সংখ্যালঘু লোককে গরুর মাংস দিয়ে খিচুরি রান্না করে খাওয়ানো হয় বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। ২৩ নবেম্বর সাঁথিয়া উপজেলার হুণ্ডুরিয়া গ্রামের সাধন বিশ্বাস ও টাবল বিশ্বাসের পুকুরের মাছ এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা জোর করে ধরে নিয়ে যায়। এ সময় পুকুরের মালিকদ্বয় বাধা দিতে গেলে তাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় এবং কাউকে না বলার জন্য শাসিয়ে দিয়ে বলে যে, বেশি বাড়াবাড়ি করলে কিংবা আইনের আশ্রয় নেওয়া হলে তাদেরকে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে। একই দিন সাঁথিয়া উপজেলার নাগ ডেমরা ইউনিয়নের হারিয়া গ্রামের অখিল চন্দ্র সরকার এ প্রতিনিধির কাছে বলেন, একই গ্রামের মফিজ মোল্লা গং বাহিনী তার ৭ বিঘা জমিতে জোর করে মাসকালাই ছিটিয়ে জবর দখল করেছে এবং উক্ত জমিতে তাদেরকে যাওয়া ও চাষাবাদ না করার জন্য হুমকি দিয়েছে। এ ব্যাপারে অখিল চন্দ্র সাঁথিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে অবহিত করেন।

ভোরের কাগজ, ১ ডিসেম্বর ২০০১

Exit mobile version