Site icon অবিশ্বাস

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে দুর্নীতি-মাদকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লেখালেখি, থানায় নিয়ে মারধর

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষে এম এস কে মাহাবুব (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।  ৯ মে শনিবার বিকেলে এই ঘটনা ঘটে।

 

পরিবারের অভিযোগ, তাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে প্রচণ্ড মারধোরের পর ইয়াবা দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এরপর থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষে দ্বিতীয় দফা তাকে ফের মারধর করে প্রতিপক্ষের কয়েকজন। এরমধ্যে থানার এক এসআইও রয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাহবুব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লেখালেখি করতেন। সম্প্রতি নবীনগরের শহরের পূর্ব পাড়ার মাদকব্যবসায়ী লিটন দেব ও তার স্ত্রী মনি দেবকে নিয়ে লেখালেখির কারণে তাকে আটক করে পুলিশ।

সর্বশেষ মেহেদী হাসান নামে স্থানীয় এক মাওলানার সঙ্গে মাহবুবের বিরোধ হয়। ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি লেখালেখিও চলে এই দুজনের।

মাহবুব ওই মাওলানার বিরুদ্ধে হত্যা এবং অপপ্রচারের অভিযোগ করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার নিরাপত্তা সেলে। এরপরই ৯ মে শনিবার তাকে মারধোর করে ইয়াবা দিয়ে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর আগে শুক্রবার (৮ মে) মোবাইলে মাহবুবকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়।

মাহাবুবের ছোটবোন স্কুল শিক্ষিকা উম্মে কুলসুম মিলি  বলেন, ‘শনিবার বিকেল ৩টার দিকে একজন ছেলে আমার ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরই দেখি তাকে কয়েকজন প্রচণ্ড মারতে মারতে একটি অটোরিকশায় উঠিয়েছে। তাদের মধ্যে মাওলানা মেহেদীও ছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরে থানায় গিয়ে জানতে পারি, মেহেদী ও তার লোকজন আমার ভাইকে ৭ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ পুলিশে সোপর্দ করে। তারা থানার ভেতরে পুলিশের ডিউটি অফিসারের কক্ষেও আমার ভাইকে প্রচণ্ড মারধর করে।’

মাহবুবের মা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা সালেহা খাতুন জানান, তার ছেলে নবীনগরের বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে সোচ্চার ছিল। এতে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি মাহাবুবের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মাওলানা মেহেদী নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনোজিত রায়ের ঘনিষ্ঠ।

নবীনগর পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট শিব শংকর দাস বলেন, ‘থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষে মাহাবুবকে মারধর করার ঘটনাটি আমি শুনেছি। এর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার।’

এ বিষয়ে ওসি রনোজিত রায় বলেন, ‘৭ পিস ইয়াবাসহ ২০/২৫ জন মানুষ মাহাবুবকে থানায় ধরে নিয়ে আসে। আমরা ঘটনা তদন্ত করছি।’

থানার ভেতরে মারধরের বিষয়ে ওসি বলেন, ‘ডিউটি অফিসারের রুমতো থানার গেটের সামনে। সেখানে নয়, বাইরে তাকে প্রচণ্ড মারধোর করেছে। অনেকে তা দেখছে। অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করব। থানায় আসার পর আমরা তার মেডিকেল করিয়েছি।’

দৈনিক আমাদের সময়

Exit mobile version