Site icon অবিশ্বাস

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার ছাত্রীটির পরিবারকে উল্টো সোয়া লাখ টাকা জরিমানা করার অভিযোগ আঃ নেতাদের বিরুদ্ধে

ধর্ষণের শিকার হয়ে স্কুলপড়ুয়া মেয়েটি (১৫) অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ায় পরিবারটি এমনিতেই বিপাকে। তার ওপর ওই পরিবারটিকেই দোষী সাব্যস্ত করে গ্রাম্য সালিসে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ‘জরিমানা’ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।

 

কথিত জরিমানার টাকা দিতে না পারায় ২০ জুলাই সোমবার পরিবারটির গরু, ছাগল, সেচযন্ত্র, ভ্যান, বাইসাইকেলসহ বেশ কিছু জিনিস বাড়ি থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবশ্য পুলিশ বেশির ভাগ জিনিসপত্র উদ্ধার করেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার নহাটা ইউনিয়নে। ১৬ জুলাই অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীটিকে ধর্ষণের অভিযোগে মহম্মদপুর থানায় মামলা করেছে ভুক্তভোগী পরিবারটি। মামলায় মাগুরা সদর উপজেলার বেরইল পলিতা ইউনিয়নের ভাঙ্গুড়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে শাহাবুল ইসলামকে (১৯) আসামি করা হয়েছে। মামলার পর কলেজছাত্র শাহাবুলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবারটির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কলেজছাত্র শাহাবুলের সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর সূত্র ধরে মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, ৮ জুলাই ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নহাটা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা সিদ্দিকি ওরফে লিটনের কাছে যান ওই কিশোরীর চাচা। দুই দিন পর ১০ জুলাই ভুক্তভোগী পরিবারের বাড়ির পাশে একটি জায়গায় সালিস বসানো হয়। মোস্তফা সিদ্দিকির নেতৃত্বে ওই সালিসে শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। সালিসে বিয়ের আগে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অভিযোগে ভুক্তভোগী পরিবারকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে টাকা পরিশোধের জন্য ১০ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ছয় মাসের জন্য পরিবারটিকে সমাজচ্যুত করেন সালিসকারীরা। সেই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে না যাওয়ার জন্যও পরিবারটিকে হুমকি দেওয়া হয়।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, সালিসে দাবি করা কথিত জরিমানার টাকা তাঁরা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বাড়িতে চড়াও হন নেতারা। গতকাল সকালে ভুক্তভোগীদের বাড়িতে যায় নহাটা ইউনিয়নের সাবেক সদস্য ওবায়দুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন। তাঁরা বাড়ি থেকে একটি গরু, চারটি ছাগল, একটি সাইকেল, ভ্যান, শ্যালো মেশিনসহ বেশ কিছু জিনিস ছিনিয়ে নিয়ে যান তাঁরা। খবর পেয়ে পুলিশ ছিনিয়ে নেওয়া অধিকাংশ মালামাল উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় পরিবারটি একটি মামলা করেছে জানিয়ে মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারক বিশ্বাস বলেন, ওই মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা সিদ্দিকি, ওবায়দুর রহমানসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।

প্রথম আলো

Exit mobile version