Site icon অবিশ্বাস

মাদারীপুরে ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ, মসজিদের ইমাম আটক

মাদারীপুরে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১২) একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনায় মেহেদী হাসান মোল্যা নামে মসজিদের এক ইমামকে আটক করা হয়েছে। ওই ছাত্রী ইমামের কাছে আরবি শিক্ষা গ্রহণ করতো। এই সুযোগে মেহেদী হাসান মোল্যা ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় মসজিদের ইমামকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।

রাতে ধর্ষিতা ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। রাতেই ওই স্কুলছাত্রীকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ইমাম মেহেদী হাসান মোল্যা বাগেরহাট জেলার রায়েন্দা থানার রাজাপুর গ্রামের আবদুল জব্বার মোল্লার ছেলে। সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের কুমড়াখালি এলাকার জবানখান জামে মসজিদে ১২ বছর ধরে ইমাম হিসেবে চাকরি করছেন।

পুলিশ, পারিবারিক ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ওই স্কুলছাত্রী এলাকার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। স্কুলে যাওয়ার আগে প্রতিদিন সকালে এলাকার অন্য শিশুদের সাথে সে গ্রামের মসজিদে ইমাম মেহেদী হাসান মোল্যার কাছে আরবি পড়তে যায়।

প্রতিদিনের মতো গত ১২ অক্টোবর সকালে অন্যদের সাথে সেও আরবি পড়তে যায়। পড়া শেষে সবাইকে ছুটি দিলেও ইমাম মেহেদী হাসান তাকে ছুটি দেননি। ঝাড়ু দেওয়ার কথা বলে তিনি নিজের কক্ষে মেয়েটিকে নিয়ে যান। পরে ঘরের দরজা বন্ধ করে ইমাম তাকে জোর করে ধর্ষণ করেন। মেয়েটি চিৎকার করতে থাকলে তার মুখে কাপড় চাপা দেন ইমাম। মেয়েটি ভয়ে বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে চেপে রাখে।

এরপর গত ১৫ অক্টোবর একইভাবে তাকে আবারো ধর্ষণ করা হয়। এসব কথা কারো কাছে বললে তাকে মেরে ফেলা হবে বলেও ছাত্রীকে শাসিয়ে দেন ইমাম।

পরে ৫ নভেম্বর দুপুরে মেয়েটি স্কুলে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। শিক্ষকরা তার পরিবারের সদস্যদের খবর দিলে তারা স্কুলে গিয়ে মেয়েটিকে বাড়ি নিয়ে যান। সন্ধ্যার দিকে মেয়েটি তার নানীর কাছে সবকিছু খুলে বলে। এ ঘটনার কথা এলাকার লোকজন জানতে পেরে ইমাম মেহেদী হাসান মোল্ল্যাকে আটক করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ইমামকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

রাতে ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। আজ বুধবার সকালে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মেহেদী হাসানকে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।

নির্যাতিতার বাবা বলেন, মসজিদের ইমাম মেহেদী হাসানকে এলাকাবাসী আটক করে। পরে মাদারীপুর সদর উপজেলার চরমুগরিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দিলে পুলিশ এসে ইমামকে থানায় নিয়ে যায়। এই ঘটনায় আমি মামলা করেছি এবং ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

চরমুগরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ পরিদর্শক আবুল কালাম বলেন, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে এলাকাবাসী আমাদের ঘটনাটি জানালে আমরা সেখান থেকে মেহেদী হাসান নামে একজনকে থানায় নিয়ে আসি।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. শশাংক চন্দ্র ঘোষ বলেন, একটি মেয়ে রাতে ধর্ষণের অভিযোগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আমরা মেডিক্যাল চেকআপের জন্য আলামত সংগ্রহ করেছি। বর্তমানে মেয়েটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

কালের কণ্ঠ

Exit mobile version