Site icon অবিশ্বাস

মাদ্রাসার শিশু-কিশোরদের ‘ব্রেইন ওয়াশ’ করে জঙ্গি বানাতেন গুনবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়া থেকে ২০০৮ সালে তাইসির দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন মাহমুদ হাসান গুনবি। এর পরপরই রাজধানীর মাদ্রাসায় শুরু করেন শিক্ষকতা। একে একে কুমিল্লা, নোয়াখালী, কক্সবাজার, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির বিভিন্ন মাদ্রাসায় কখনও অতিথি শিক্ষক, কখনওবা খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কোনো কোনো মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। ২০১০ সালে স্থানীয় মসজিদে তিনি ওয়াজ শুরু করেন। তবে ২০১৪ সালে নিজ কর্মস্থল মাদ্রাসার শ্রেণিকক্ষে, স্থানীয় মসজিদ এমনকি ফেসবুক, ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়ে তার উগ্রবাদী বক্তব্য।

নিজেকে একজন দর্শন পরিবর্তনকারী হিসেবে পরিচিত দেওয়া গুনবির বিরুদ্ধে অভিযোগ- মাদ্রাসার কোমলমতি শিশু কিশোরদের সমাজ, রাজনীতি, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান ইত্যাদি থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়ার। ছাত্র-ছাত্রীদের মস্তিষ্কে ধর্মীয় অপব্যাখ্যার মাধ্যমে ভয়ভীতি তৈরি করে তাদের স্বাভাবিক জীবন সম্পর্কে বিতৃষ্ণা জাগ্রত করা। যাতে তরুণদের ভেতর আবেগ, অনুভূতি, বুদ্ধিমত্তা, পারিবারিক বন্ধন ও বিচারিক জ্ঞান লোপ পায়।

শুক্রবার (১৬ জুলাই) সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ আনা হয় গুনবির বিরুদ্ধে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবের কাছে মাহমুদ হাসান গুনবি জানান, প্রথমে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। পরবর্তীতে জসিম উদ্দিন রহমানির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হলে আনসার আল বাংলা টিমে যুক্ত হন।
র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গুনবি যেসব মাদ্রাসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সেখানে উগ্রবাদী বক্তব্য ও বই তৈরি করে সেগুলো ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বিলি করতেন। এমনকি গত ৫ মে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ঢাকা থেকে জঙ্গিবাদের অভিযোগে গ্রেপ্তার আল সাকিবের মতাদর্শ পরিবর্তন ও তাকে আত্মঘাতি পথে উদ্ধুদ্ধ করার পেছনে গুনবির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বলে জানায় র‌্যাব।
সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, জাতীয় সংসদ ভবনের আশপাশের এলাকায় দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা পরিকল্পনার সঙ্গে গুনবির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এসময় গুনবির মতো উগ্রবাদীদের মোটিভেশন পাওয়ার ভয়ংকর মন্তব্য জানায় র‌্যাব। গুনবির মতো ১৮৭ উগ্রবাদী স্কলারকে চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে র‌্যাব গ্রেপ্তার করেছে। গত বছর উগ্রবাদী বক্তব্য রাখায় গ্রেপ্তার করা হয় ৩৭০ জনকে।
গ্রেপ্তারকৃত গুনবির বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে উগ্রবাদী রাষ্ট্র বানাতে তৎপর বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করার অভিযোগ উঠেছে। একইসঙ্গে কক্সাবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মসজিদেও উগ্রবাদী ওয়াজের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।
এ সময় আফগানিস্তানে তালেবান পরিস্থিতির দিকে নজরদারি রাখা হচ্ছে বলেও জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

সময় নিউজ টিভি

Exit mobile version