Site icon অবিশ্বাস

মায়ের সামনে কলেজপড়ুয়া কন্যাকে রাতভর ধর্ষণ ভাঙ্গায় বর্বরতম নির্যাতনের শিকার হয়েছে এক সংখ্যালঘু পরিবার

নৌকায় ভোট দেওয়ার কারণে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর গ্রামে একটি সংখ্যালঘু পরিবার বর্বরতম নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বিএনপি-মৌলবাদী সমর্থকেরা ঐ পরিবারের বাড়ি-ঘরে হামলা চালিয়ে মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করেই ক্ষান্ত হয়নি, ঘরের মধ্যেই সারারাত মদ খেয়ে পৈশাচিক উল্লাসে মায়ের সামনেই কলেজপড়ুয়া কন্যাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে। বাধা দেওয়ায় মাকেও ব্যাপক মারপিট করা হয়েছে। ’৭১ সালের বর্বরতাকেও হার মানানো এ নৃশংস ঘটনার পর থেকে পুনর্বার হামলার আশঙ্কা ও লোকলজ্জার ভয়ে ঐ পরিবারটি থানায় মামলা করতে সাহস পাচ্ছে না। পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, ৬ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মোশরারফ হোসেনের ভাই হাবি, পলাশ, মোঃ সেকেন, জামাল, এসকেন, কামাল ও টেক্কা নামক ৭ বিএনপি সমর্থক ও সন্ত্রাসী আজিমনগর গ্রামের ঐ সংখ্যালঘু পরিবারের বাড়িতে হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা ‘নৌকায় ভোট দেওয়ার মজা দেখাচ্ছি’ বলে পরিবারের কর্তাকে খুঁজতে থাকলে প্রাণভয়ে তিনি ঘরের পেছনের দরজা খুলে পালিয়ে যান। এ সময় সন্ত্রাসীরা ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে মায়ের সামনেই ঐ পরিবারের কলেজপড়ুয়া কন্যাকে সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে পালাক্রমে ধর্ষণ করতে শুরু করে। ঐ সময় মা সন্ত্রাসীদের হাতে-পায়ে ধরে মেয়ের ইজ্জত ভিক্ষা চাইলে সন্ত্রাসীরা তাকে বেদম মারপিট করে। রাত একটা পর্যন্ত এ পৈশাচিক নির্যাতন শেষে সন্ত্রাসীরা ঘরের দামি জিনিসপত্র লুট করে ঐ কলেজ ছাত্রীকে ধরে বাড়ি থেকে অন্যত্র নিয়ে পুনরায় পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং ভোর রাতে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায়। ভোর রাতেই ঐ পরিবারটি ধর্ষিতা মেয়েসহ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় পালিয়ে যায়। এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গোপালগঞ্জ থেকে ঐ পরিবারটিকে এলাকায় ফিরিয়ে নিয়ে আসে। লোকলজ্জার ভয়ে মেয়েটিকে তার আত্মীয়ের বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সন্ত্রাসীরা ঘটনার পর থেকেই ঐ পরিবারসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু পরিবারকে এ ঘটনা পুলিশ বা অন্য কাউকে জানালে সবাইকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দিচ্ছে। সন্ত্রাসীরা এলাকায় অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। এলাকার সংখ্যালঘুরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ও আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছে। নির্যাতনের শিকার উক্ত সংখ্যালঘু পরিবারের কর্তা এখনো পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অন্যদিকে পুলিশ মামলা নিতে চাইলেও পুনরায় হামলা ও লোকলজ্জার ভয়ে থানায় মামলা দায়ের করতে রাজি হয়নি নির্যাতিত পরিবারটি।

ভোরের কাগজ, ১৬ অক্টোবর ২০০১

Exit mobile version