Site icon অবিশ্বাস

মিথ্যা অপবাদ সইতে না পেরে অন্তঃসত্ত্বা হিন্দু গৃহবধূর আত্মহত্যা

ফেসবুক মেসেঞ্জারে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় মিথ্যা অপবাদ সইতে না পেরে ফরিদপুরের মধুখালীতে ১৫ মে শনিবার পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ রীমা রানী সাহা (২২) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

 

খবর পেয়ে ১৬ মে রবিবার সকালে পুলিশ ওই গৃহবধূর মরদেহ শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। এব্যাপারে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রীমা রানী সাহা মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের আড়কান্দি গ্রামের ব্যবসায়ী পলাশ কুমার সাহার স্ত্রী। তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। চার বছর আগে মধুখালীর আড়কান্দি গ্রামের প্রভাষ সাহার ছেলে পলাশ কুমার সাহার সঙ্গে  চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার নানবার গ্রামের নিশ্চিন্ত কুমার সাহার মেয়ে রীমার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।

নিহত রীমার শ্বশুর প্রভাষ কুমার সাহা জানান, কদিন আগে ‘সুখতারা’ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে রীমার পরকীয়ায় আসক্ত বলে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হয়। এরপর একটি অচেনা মোবাইল নম্বর থেকে আমাকে ফোন করে একই কথা বলা হয়। আমি পরিচয় ও প্রমাণ জানতে চাইলে আমাকে বলা হয়, যেদিন প্রমাণ দিতে পারব সে দিনই পরিচয় দেব। আমার মেয়ের ঘরের ছেলে (নাতি) উৎসবের মেসেঞ্জারে বলা হয়, রীমার সাথে এক যুবকের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। রীমার গর্ভের সন্তান ওই যুবকের। তিনি বলেন, রীমা অন্তঃসত্ত্বা থাকায় আমরা কেউ তাকে কিছু বলিনি। হয়তো কোনোভাবে কারো কাছ থেকে শুনেছে। মিথ্যা অপবাদ সইতে না পেরে রীমা গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রীমার আত্মহত্যার জন্য দায়ীদের বিচারের দাবি জানান তিনি।

এদিকে, রীমার মা শিউলী সাহা বলেন, ‘আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। রীমার নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই’। রীমার স্বামী পলাশ কুমার সাহা অসুস্থতার কথা বলে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

মধুখালী থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে রবিবার সকালে শ্বশুরবাড়ি থেকে রীমার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর রীমার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তিনি বলেন, রীমাকে নিয়ে যারা ফেসবুক মেসেঞ্জারে অপবাদ ছড়িয়েছে এবং ‘সুখতারা’ আইডি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

কালের কণ্ঠ

Exit mobile version