রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে জঙ্গি সংগঠন ‘আল্লাহর দল’-এর ভারপ্রাপ্ত আমিরসহ চার সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৩-এর একটি দল রবিবার (১৮ আগস্ট) রাত ১০টা থেকে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে বলে সোমবার এক বিশেষ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এসময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল, পেনড্রাইভ এবং হার্ডড্রাইভ উদ্ধার করে র্যাব।
ছবিঃ ঢাকা ট্রিবিউন
গ্রেফতার চারজন হলেন- পাবনার ইব্রাহিম আহমেদ হিরো (৪৬) ও শফিকুল ইসলাম সুরুজ (৩৮), গাইবান্ধার আবদুল আজিজ (৫০) এবং কুড়িগ্রামের রশিদুল ইসলাম (২৮)। এদের মধ্যে ইব্রাহিম আহমেদ হিরো নিষিদ্ধ ঘোষিত এই সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আমির। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে র্যাব জানিয়েছে।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৫ সালে জঙ্গি সংগঠন ‘আল্লাহর দল’ গড়ে উঠে। ২০০৪ সালের শেষের দিকে তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির সাথে একীভূত হয়। পরে নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের কারণে জেএমবি নেতৃত্বশূন্য এবং সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লে জঙ্গি মতিন মেহেদী তার সংগঠন ‘আল্লাহর দল’ নিয়ে আলাদা হয়ে যান।
২০০৭ সালে গ্রেফতার হন মতিন মেহেদী। এরপর সংগঠনের আমির (তারকা) হিসেবে তাকে মান্য করা হলেও ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইব্রাহিম আহমেদ হিরো। পরে কৌশলগত কারণে ২০১৪ সালে সংগঠনটির নাম পরিবর্তন করে ‘আল্লাহর সরকার’ রাখা হয় বলেও জানায় র্যাব।
র্যাব জানায়, সংগঠনটির নেতৃস্থানীয় সদস্যরা ফিল্মি স্টাইলে তাদের আমিরকে কারাগার থেকে মুক্ত করার পরিকল্পনা করেছিলেন।
ভারপ্রাপ্ত আমির হিরো জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তিনি সংগঠনের ‘অধিনায়ক’ হিসেবে কেন্দ্রীয় দায়িত্ব পালন করছেন। তারকার (আমির) অনুপস্থিতিতে তিনি সংগঠনটির নেতৃত্বে রয়েছেন অর্থাৎ ভারপ্রাপ্ত তারকা (আমির)। প্রসঙ্গত, নিষিদ্ধ ঘোষিত এই সংগঠনের সদস্যদের কাছে দলের আমির তারকা হিসেবে অভিহিত হয়ে থাকেন।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, ‘আল্লাহর দল’ -এর প্রধান এইচএসসি পাশ ইব্রাহিম পেশায় একজন মোটর পার্টস ব্যবসায়ী ছিলেন। ১৯৯৭ সালে উগ্রবাদী দলে তার প্রবেশ ঘটে এবং তিনি মতিন মেহেদীর কাছ থেকে সরাসরি বায়াতপ্রাপ্ত।
গ্রেফতার আবদুল আজিজ গাইবান্ধার একটি কলেজ হতে বি.কম সম্পন্ন করেছেন। তিনি পেশায় প্রাইভেট টিউটর। ১৯৯৭ সালে মতিন মেহেদীর মাধ্যমে তার উগ্রবাদী দলে প্রবেশ। তিনি জঙ্গি সংগঠনটির অতিরিক্ত অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।
গ্রেফতার হওয়া শফিকুল ইসলাম সুরুজ পাবনার একটি স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেছেন। তিনি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকা জেলার নায়ক (কমান্ডার) হিসেবে কাজ করছেন।
গ্রেফতার অপর ব্যক্তি রশিদুল ইসলাম নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন এবং বর্তমানে একটি কম্পিউটার দোকানে কর্মচারী হিসেবে নিয়োজিত। তিনি প্রায় চার বছর ধরে কুড়িগ্রাম জেলার নায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।