Site icon অবিশ্বাস

রৌমারীতে কওমি মাদ্রাসায় ৮ বছরের শিশুকে নির্মম নির্যাতন

পড়া না পড়ায় কুড়িগ্রামের রৌমারীতে কওমি মাদ্রাসার ৮ বছরের এক ছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছেন ওই মাদ্রাসার দুই শিক্ষক। গত বুধবার (১১ নভেম্বর) এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও টানা কয়েকদিন শিশুটিকে পরিবারের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতে দেননি মাদ্রাসার শিক্ষকরা।

 

রৌমারী উপজেলা সদরের এক কিলোমিটার উত্তরে রৌমারী উত্তর পাড়া গ্রামে রৌমারী কওমি মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।  শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) শিশুটির বাবা তাকে উদ্ধার করে রৌমারী সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তিনি বাদি হয়ে রৌমারী থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ মাদ্রাসার পরিচালককে গ্রেফতার করে। তবে পালিয়েছেন ওই দুই শিক্ষক।

নির্যাতনের শিকার শিশুটির নাম আইয়ুব আনছারী (৮)। সে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বাইমমারী গ্রামের আব্দুল্লাহর ছেলে।

অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন- ওই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক হাফেজ কারী রফিকুল ইসলাম ও শিক্ষা সচিব জয়নাল আবেদীন। পুলিশের হাতে গ্রেফতার মাদ্রাসার পরিচালকের নাম নুরুল্লাহ (৩২)। তিনি জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার পীরির চর গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে।

ওই ছাত্রের বাবা আব্দুল্লাহ বলেন, ছেলেকে আলেম বানাতে কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি করি। সে মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করছিল। প্রায় প্রতিদিন হুজুরের মোবাইল ফোনে ছেলের খোঁজ খবর নিই। কিন্তু কয়েক দিন থেকে হুজুর ছেলের সঙ্গে কথা বলতে দেননি। ছেলের খবরের অপেক্ষার পর তার দাদির বাড়ি থেকে হঠাৎ ফোন দিয়ে আমাদের আসতে বলা হয়। এসে দেখি আমার ছেলের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন। তাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য রৌমারী হাসপাতালে ভর্তি করি। হুজুররা ছেলেকে আঘাতের কথা বাইরে প্রকাশ করতে নিষেধ করেন। হুজুরদের এমন আচরণে ছেলেকে ওই মাদ্রাসায় পড়ানো মোটেই সম্ভব নয়। ছাত্রদের নির্যাতনের পর অভিভাবকদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে দিলে মোবাইলের অটো রেকর্ড অপশন চালু করে দেওয়া হয়। নির্যাতনের কথা অভিভাবকদের জানালে তাদের দ্বিগুণ শাস্তি দেওয়া হয়। একারণেই শিক্ষার্থীরা ভয়ে মুখ খোলে না। তারা মানুষ নয়, অমানুষ।

মাদ্রাসার সভাপতি কাবিল উদ্দিনকে জানান, অভিযুক্ত শিক্ষকদের কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক বহিষ্কার করা হবে।

রৌমারী থানার অফিসার ইনর্চাজ ইমতিয়াজ কবির জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষক মাদ্রাসা পরিচালক নুরুল্লাহ নামের একজনকে গ্রেফতার করে কুড়িগ্রাম জেল হাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

ইত্তেফাক

Exit mobile version