Site icon অবিশ্বাস

শ্যামপুরের জেলেপাড়ায় হামলা লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ ঃ আহত ১০

রংপুরের প্রত্যন্ত পল্লী এলাকা সদর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে শ্যামপুরের জেলে পাড়ায় একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে বাড়ির রূপসী গৃহবধূর (৩০) শ্লীলতাহানিসহ বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায়। হামলার ফলে ১০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গর্ভবর্তী সেই গৃহবধূকে হাসপাতালে আশংকাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় মিঠাপুকুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৩৭, তারিখ ১৮ মে, ২০০২। ওই ঘটনার পর এলাকার জেলে সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, ঘটনার সময় শ্যামপুর গ্রামের প্রভাবশালী আঃ সালাম ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের একাধিক নেতার ছত্রছায়ায় ২৫/৩০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসীসহ শ্যামপুর জেলে পাড়ার জেলে পরিবারগুলোর চলাচলের একমাত্র রাস্তা কেটে পুকুর খনন করতে থাকে। এ সময় জেলে পাড়ার আন্দারু দাস পুকুর খননে বাধা দিলে তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় জেলে পরিবারগুলোর অন্যরা ঘটনাস্থলে জড়ো হতে থাকে। এ পর্যায়ে আঃ সালামসহ ওই সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অতর্কিত জেলে পাড়ায় হামলা চালায়। এ সময় তারা মোহন চন্দ্র দাসের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় তার ৯ মাসের গর্ভবর্তী স্ত্রী বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় হামলাকারীরা তার শ্লীলতাহানি ঘটায়। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার ফলে আন্দারু (৪৫), মোহন্ত (৩৮), মধু (২৪), দিনা (২৮) ননীবালা (৩৫) ও কান্তবালা (৩০) আহত হয়। তবে তাদের আঘাত গুরুতর নয়। হামলার সময় সন্ত্রাসীরা মাঝিপাড়া থেকে ৩টি গরু, ২টি ছাগল, ৫টি জাল ও নগদ টাকা-পয়সাসহ আসবাবপত্র লুটপাট করেছে। নির্যাতিত গৃহবধূটির পরিবার জানিয়েছে, সন্ত্রাসীদের হামলা ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় তার গর্ভজাত সন্তানকে বাঁচানো যাবে না বলে ডাক্তার জানিয়েছে। পুলিশ ওই সন্ত্রাসী ঘটনাটি গোপন রাখার চেষ্টা করে। মিঠাপুকুর থানায় এ ব্যাপারে জানতে গেলে তারা কোন মামলা হয়নি এবং বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। অবশেষে গত শনিবার ওই ঘটনা নিয়ে এলাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আবার হামলার আশংকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ খবর পেয়ে মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আকতার, এএসপি রফিকুল ইসলামসহ মিঠাপুকুর থানার ওসি শেখ আঃ হাকিম গত শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সেখানে পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। মামলায় ২২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

যুগান্তর, ২০ মে ২০০২

Exit mobile version