Site icon অবিশ্বাস

সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে বোমা হামলা, মন্ত্রীর প্রটোকলের পুলিশসহ আহত ২

রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকার পুলিশ বক্সের সামনে ককটেল বিস্ফোরণে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের গাড়িবহরে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। অপরজন ওই স্থানে ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। আহতরা হচ্ছেন এএসআই শাহাবুদ্দিন (৩৫) ও কনস্টেবল আমিনুল (৪০)। শনিবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় পুলিশ বক্সের সামনে ৩১ আগস্ট রাত আনুমানিক ৯টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম এ সময় গাড়িতে থাকলেও তার কোনও ক্ষতি হয়নি। তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া দাবি করেছেন, দুর্বৃত্তরা সায়েন্স ল্যাবরেটরি পুলিশ বক্সকে টার্গেট করেই বোমা হামলাটি ঘটায়।এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।


পুলিশ জানায়, আহত এএসআই শাহাবুদ্দিন (৩৫) ঢামেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে অপর আহত কনস্টেবল আমিনুলের (৪০)  হাতে ব্যান্ডেজ বেঁধে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়। গোলাম রসুল নামের একজন সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

আহত এএসআই শাহাবুদ্দিন জানান, তিনি এলজিআরডি মন্ত্রীর প্রটোকলে ছিলেন। এ সময় রাস্তায় জট দেখে, নেমে সামনে যান। ঠিক সে সময় তার পাশে হঠাৎ একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। এতে তিনি পায়ে আঘাত পান। কিছুক্ষণ আগে মন্ত্রী এসে তাদের দেখে চলে গেছেন।

ডিএমপি রমনা বিভাগের সহকারী কমিশনার (নিউ মার্কেট) সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের একজন এএসআই পুলিশ বক্সের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তার ওপর ককটেল চার্জ করা হয়। তিনি পায়ে আঘাত পেয়েছেন। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তিনি জানান, এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। ঘটনাস্থলে পুলিশের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এলজিআরডি মন্ত্রীকে প্রটোকল দিয়ে আনতে একটি প্রটোকলের গাড়ি যাচ্ছিল। সড়কে যানজট লেগে গেলে প্রটোকলের গাড়ি থেকে ওই পুলিশ সদস্য নেমে যানজট ছাড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। ঠিক তখন এ হামলা করা হয়। পুলিশ ধারণা করছে, সায়েন্স ল্যাবের ফুটওভার ব্রিজের ওপর থেকে এই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে।

এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সহকারী একান্ত সচিব মো. জাহিদ হোসেন চৌধুরী  বলেন, ‘মন্ত্রী গাড়িতে ছিলেন। তাকে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের গাড়িটি সামনে ছিল। একজন পুলিশ সদস্য প্রোটেকশনের গাড়ি থেকে নেমে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে যানজট নিরসনে কাজ করছিলেন। তখনই বোমাটির বিস্ফোরণ হয়। এতে প্রোটেকশনের দায়িত্বে থাকা পুলিশের এএসআই শাহাবুদ্দিন আহত হন। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পর মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ওই এলাকা থেকে চলে যান। তার গাড়িতে কিছু হয়নি। তিনি সুস্থ আছেন।’

এদিকে, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া দাবি করেছেন, ট্রাফিক বক্সে থাকা পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে ককটেলটি নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি, জনগণের মধ্যে ভীতি সঞ্চার ও পুলিশের মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য এই হামলা হতে পারে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। এ ঘটনার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত ১১টার দিকে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

এরআগে, গুলিস্তান ও মালিবাগে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। গত ২৯ এপ্রিল গুলিস্তানে একটি ট্রাফিক বক্সের পাশে হাতে তৈরি বোমা বা আইইডি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে ট্রাফিক পুলিশের দুই সদস্য ও একজন কমিউনিটি পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনার ঠিক ২৮ দিন পর গত ২৬ মে রাত পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীর মালিবাগের পলওয়েল ফিলিং স্টেশনের বিপরীতে ফ্লাইওভারের নিচে রাখা পুলিশের বিশেষ শাখার একটি পিক-আপভ্যানে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এতেও ট্রাফিক পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাশেদা আক্তার, লাল মিয়া নামে একজন রিকশাচালক ও শাহনাজ শারমিন নামে এক পথচারী আহত হন। এছাড়া ২৩ জুলাই রাতে রাজধানীর পল্টন ও খামাড়বাড়ি পুলিশ বক্সের কাছে ফেলে রাখা বোমা উদ্ধার করা হয়। এসব ঘটনার পর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছিল জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।

 

বাংলা ট্রিবিউন

Exit mobile version