নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসা থেকে এক ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর তার বাবা হত্যার অভিযোগ তুলেছেন; এই অভিযোগে মাদ্রাসার শিক্ষকসহ সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
১২ মার্চ শুক্রবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের রসুলবাগ মাঝিপাড়া এলাকার রওজাতুল উলুম মাদ্রাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এরা হলেন মাদ্রাসার শিক্ষক শওকত হোসেন সুমন (২৬), জোবায়ের আহম্মেদ (২৬) ও আব্দুল আজিজ (৪২) এবং নিহত শিক্ষার্থীর চার কিশোর সহপাঠী।
নিহত ছাব্বির আহম্মেদ (১৪) রূপগঞ্জ উপজেলার বরপা এলাকার জামাল হোসেনের ছেলে। তিনি রওজাতুল উলুম মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিলেন।
গত বছরের নভেম্বর থেকে ছাব্বির হোসেন রসুলবাগের রওজাতুল উলুম মাদ্রাসায় আবাসিকভাবে থেকে পড়ালেখা করতে আসছিলেন।
এই ঘটনায় শুক্রবার সকালে ছেলেটির বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার বরাত দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, ১০ মার্চ ১১টার দিকে মাদ্রাসার শিক্ষক জোবায়ের নিহতের পরিবারকে জানান ছাব্বির মাদ্রসার ছাদে উঠার সিড়ির পাশে রডের সঙ্গে গলায় গামছা দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পরে স্বজনরা লাশ নিয়ে যান এবং পুলিশে অভিযোগ না দিয়ে রূপগঞ্জে নিজ এলাকায় দাফন করেন।
কিন্তু দাফনের আগে লাশের গোসলের সময় নিহতের শরীরে, ঠোঁটে, মাথার ডানদিকে কপালের উপর আঘাতের চিহ্নসহ গালায় রশির দাগ দেখতে পান বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
ওসি বলেন, বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা থেকে অজ্ঞাত পরিচয় এক হুজুর নিহত ছাত্রের বাবার মোবাইলে ফোন করে তাকে বিভিন্নভাবে বুঝ দেওয়াসহ ছেলের মৃত্যুর বিষয় নিয়ে থানা পুলিশে সংবাদ না দেওয়ার পরামর্শ দেন। তখন নিহতের বাবা ও পরিবারের সন্দেহ সৃষ্টি হয়।
ওসি মশিউর রহমান বলেন, এ বিষয়ে নিহতের বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ময়নাতদন্তের পরই নিশ্চিত হয়া যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা।
নিহতের লাশ কবর থেকে উত্তোলনের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে এবং পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় তিন জন শিক্ষক ও চার জন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিন শিক্ষককে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। গ্রেপ্তার চার সহপাঠী কিশোর হওয়ায় তাদের কিশোর আদালতে পাঠানো হয়েছে।