গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় একটি মসজিদ কমিটির সভাপতির পদ নিয়ে দ্বন্দের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষের অন্তত সাত জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৯ এপ্রিল) জুমার নামাজের পর কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের ছিলামনি বাজার জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে ওই মসজিদের নবগঠিত কমিটির সভাপতি শাহাবুদ্দিন বাদী হয়ে সুন্দরগঞ্জ খানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সুন্দরগঞ্জ থানার উপ-পরির্দশক (এসআই) মো. সেলিম রেজা। তিনি জানান, পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ছিলামনি গ্রামের মসজিদের জমি ও কমিটি নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল। স্থানীয় আমির উদ্দিনের ছেলে দুলা মিয়া, মুকুল মিয়া ও নয়া মিয়ার সঙ্গে শাহাব উদ্দিনের এই বিরোধ চলে আসছে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর মসজিদে উপস্থিত মুসল্লিদের নিয়ে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। এসময় মুসল্লিদের ভোটে এবং সমর্থনে শাহাব উদ্দিন সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু শাহাব উদ্দিনকে সভাপতি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান দুলা মিয়াসহ তার তিন ভাই। এক পর্যায়ের মুসল্লিসহ উভয়পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। এতে নবগঠিত কমিটির সভাপতি শাহাব উদ্দিন ও খতিব মো. মোস্তাক আহম্মেদসহ সাত জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ছিলামনি এলাকার বাসিন্দা ও স্কুলশিক্ষক লাভলু মিয়া জানান, দুলা মিয়াসহ তার পরিবারের লোকজন দীর্ঘীদন ধরেই মসজিদের জমি এবং কমিটি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি করে আসছিলেন। মসজিদের মুসল্লিসহ স্থানীয় লোকজন দুলা মিয়াকে না মানলেও তিনি জোর করে কমিটির সভাপতি হতে চান। কিন্তু মুসল্লিদের সমর্থনে শাহাব উদ্দিকে সভাপতি করা হয়। তাকে সভাপতি মানতে রাজি হননি দুলা মিয়া। এ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে আহত মসজিদ কমিটির সদস্য লীল মিয়া ও খতিব মো. মোস্তাক আহম্মেদ জানান, দুলাসহ তার তিন ভাই তাদের ওপর হামলা করে আহত করে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করেন তারা।
মসজিদ কমিটি গঠনের বিরোধের বিষয়টি জানা আছে কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনোয়ার আলম সরকারের। তিনি জানান, কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্বের ঘটনায় নিজে উপস্থিত থেকে বিষয়টি সমাধানে উভয়পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসা হয়েছিল। নতুন কমিটি গঠনের সিন্ধান্ত হলেও দুলাসহ তার পরিবার বিষয়টি মেনে নেয়নি। সংঘর্ষের ঘটনা থানা পুলিশসহ উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।