হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী তানিয়া আক্তার (২২) আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলায় শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
২৫ নভেম্বর বুধবার রাতে বাহুবল মডেল থানায় দেবর জানে আলমকে প্রধান আসামি করে শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদসহ পাঁচ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন তানিয়ার মা রুনা আক্তার।
এরপরই অভিযান চালিয়ে বুধবার রাত ১টার দিকে উপজেলার ভূগলী গ্রাম থেকে মামলার ২ নম্বর আসামি শ্বশুর হারুনুর রশিদকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
জানা গেছে, বাহুবল উপজেলার মির্জাটুলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী নুরুল ইসলামের মেয়ে তানিয়া আক্তারের (২২) সঙ্গে তিন বছর আগে বিয়ে হয় একই উপজেলার ফদ্রখলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী শাহ আলমের। বিয়ের পর তাদের কোলজুড়ে আসে ছেলে সন্তান, যার বয়স ২২ মাস। সুখেই যাচ্ছিল তানিয়ার দাম্পত্য জীবন।
কিন্তু তানিয়ার ওপর কুদৃষ্টি পড়ে দেবর জানে আলমের। তানিয়াকে প্রায়ই সে উত্ত্যক্ত করত। তানিয়া শ্বশুর-শাশুড়িকে বিষয়টি বারবার জানালেও তারা কোনো কর্ণপাত করেননি। জানে আলমের স্ত্রীকেও বিষয়টি জানান তানিয়া। এ নিয়ে জানে আলমের সঙ্গে তার স্ত্রীর ঝগড়াও হয়। স্ত্রী নিষেধ করলেও তার নিষেধ মানেনি জানে আলম। একপর্যায়ে জানে আলমের ঘর ছাড়েন তার স্ত্রী। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো গ্রামে। এদিকে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে জানে আলম। বিচার দেওয়ার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া উঠে সে। রোববার দিবাগত রাতে দরজার লক ভেঙে তানিয়ার রুমে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে জানে আলম। এ সময় তানিয়া বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এরপর রাতে তানিয়ার ছোট ভাই তানভীরকে মোবাইলে কল দেয় জানে আলম। সে বলে, তার স্ত্রী অসুস্থ একটি অটোরিকশা নিয়ে আসতে। অটোরিকশা নিয়ে জানে আলমের বাড়িতে গিয়ে দেখেন তার স্ত্রী নয়, অজ্ঞান হয়ে পড়ে রয়েছেন তার বোন তানিয়া।
পরে তাকে হবিগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিষপান করেছে বলে ভর্তি করায় তানিয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এদিকে সোমবার ভোরে সিলেট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
বাহুবল মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, আত্মহত্যায় প্ররোচনায় মামলা করেছেন তানিয়ার মা রুনা আক্তার।
র্যাব শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের এসআই মনির বলেন, উপজেরার ভূগলী গ্রাম থেকে নিহতের শ্বশুর হারুনুর রশিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।