চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে সরকারের সমাজসেবা অধিদফতরের এক মহিলা কর্মকর্তাকে। তার নাম বকুল রানী দে। বয়স অনুমান ৫০ বছর। তিনি এলাকার ফরহাদাবাদ সরকারী শিশু পরিবার নামে একটি অনাথ শিশু কেন্দ্রের আসিতেন্তন্ট সুপারিনটেন্ডেন্ট ছিলেন। রাউজানের বিনাজুরী গ্রামের মুক্তিযুদ্ধে এক শহীদের স্ত্রী, কর্মজীবনে সৎ ও নিষ্ঠাবান হিসাবে পরিচিত বকুল রানীর এই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডে শিশুকেন্দ্রসহ পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুলিশের ধারণা অনুযায়ী, খুনীরা তাকে কোদাল দিয়ে মাথায় কোপ মেরে হত্যা করেছে। কোদালের কোপে বকুল রানীর ডান হাতের দু’টি আঙ্গুলও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সোমবার রাতে এ অনাথ কেন্দ্রের কাঁচাপাকা কোয়ার্টারে এ ঘটনা ঘটে। প্রায় ২শ’ শিশু নিয়ে পরিচালিত এই কেন্দ্রের ডাইনিং রুমে সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় তদারকি শেষে বকুল রানী তার কোয়ার্টারে ফিরে যান। মঙ্গলবার সকাল ৮টার পরও তিনি অফিসে না আসায় কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রিয়তম কুমার চৌধুরী দারোয়ানকে খোঁজ নিতে বলেন। দারোয়ান কোয়ার্টারে গিয়ে দেখে সামনের দরজা বন্ধ। তখন সে ঘরের পিছনে গিয়ে দেখে দরজা খোলা। উঁকি দিতেই দেখা গেল বকুল রানীর রক্তাক্ত লাশ মেঝেতে পড়ে আছে। দারোয়ান চিৎকার করে দৌড়ে খবরটি তত্ত্বাবধায়কের কাছে পৌঁছায়। কেন্দ্রের অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারী দ্রুত কোয়ার্টারে হাজির হয়ে খুনের নৃশংস দৃশ্য দেখে নির্বাক হয়ে পড়েন। ঘটনার খবর পেয়ে হাটহাজারী পুলিশ ও জেলার এসপি শহীদুল হক দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেন এবং লাশ মর্গে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন। এসপি সাংবাদিকদের বলেছেন, তাৎক্ষণিকভাবে হত্যাকাণ্ডের কোন ক্লু পাওয়া যায়নি। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কোদালটি লাশের পাশেই রয়েছে। লাশের কপালে, মুখে কোদালের আঘাতের চিহ্ন ও দু’টি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন রয়েছে এ থেকে প্রতীয়মান হয় খুনীরা কোদাল দিয়ে তাকে কুপিয়েছে। এসপির ধারণা পরিচিতরাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে।
দৈনিক জনকণ্ঠ, ৬ মার্চ ২০০২