Site icon অবিশ্বাস

হাতিয়ায় ধর্ষণের পর বিষপানে কিশোরীর আত্মহত্যার চেষ্টা

নোয়াখালীর হাতিয়ায় ধর্ষণের পর লোকলজ্জার ভয়ে বিষপানে এক কিশোরীর আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।

১ এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার তমরুদ্দি ইউনিয়নে রুবেল নামে স্থানীয় এক লম্পট একা পেয়ে ঘরে ঢুকে দিনমজুরের কিশোরী কন্যাকে ধর্ষণ করে। এ সময় কিশোরীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ধর্ষক যুবককে হাতেনাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে রাগে-ক্ষোভে অপমানে ওইদিন রাত ১০টায় কিশোরী বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরে স্থানীয়রা মেয়েটিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

বিলম্বে পাওয়া খবরে জানা যায়, গত দু’দিন ধরে মেয়েটি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে।

সূত্র জানায়, ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার হাতিয়া থানার ওসি আক্তারুজ্জামান শিকদার ইউএনও নূর-এ আলমের কাছে রুবেলকে নিয়ে যান। সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে রুবেলকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ৭ দিনের কারাদণ্ড দেন। সোমবার থানাহাজতে কাটানো স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী কোরবান আলীর বখাটে ছেলে রুবেল ১০ হাজার টাকা দিয়ে ২০ ঘণ্টা পর মুক্তি পায়।

ঘটনার পর থেকেই স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী রুবেলের স্বজনরা ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার ছক আঁকে। সে অনুযায়ী ধর্ষিতার পরিবারকে থানায় না যাওয়ার জন্য হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। ধর্ষণের ঘটনার বিচার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ইউএনও নূর-এ আলম মুঠোফোনে যুগান্তরকে জানান, ওসি আমার কাছে ধর্ষণের কোনো অভিযোগ করেননি। বলেছেন, রুবেল ওই কিশোরীকে বিরক্ত করত। ঘটনার দিনও সে কিশোরীর বাড়ি গিয়ে বিরক্ত করার সময় স্থানীয়রা তাকে ধরে পুলিশের কাছে তুলে দিয়েছেন। পরে অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে রুবেলকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৭ দিনের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। এর বেশি কিছু আমাকে বলা হয়নি।

তথ্য গোপন করার বিষয়ে জানতে হাতিয়া থানার ওসি আক্তারুজ্জামান শিকদারকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ধরেননি। তবে ওসির বরাত দিয়ে অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) গোলাম ফারুক যুগান্তরকে বলেছেন, আটক যুবকের সঙ্গে ওই কিশোরীর প্রেম ছিল। ঘটনার দিন যুবক কিশোরীর বাড়ির দরজায় গেলে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে দিয়েছেন। তবে কিশোরী বিষপান করলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের রায়ে তাকে জরিমানা করা হলে, জরিমানার টাকা দিয়ে যুবক ছাড়া পায়। তিনি বলেন, এটাই ছিল ওসির বক্তব্য। এলাকাবাসী বলছেন, বখাটে রুবেল প্রায়ই কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করত। সে মেয়েটিকে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাবও দেয়। ১০ দিন আগে তাকে স্থানীয়রা সতর্কও করেছিলেন।

যুগান্তর

Exit mobile version