Site icon অবিশ্বাস

হুমকির মুখে যশোরের সংখ্যালঘু ভোটার

ভোটের আগেই একটি মহল যশোরের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হুমকিধমকি দেয়া শুরু করেছে। ভোটকেন্দ্রে গেলে হত্যা করা হবে, না হলে ভারতে পাঠিয়ে দেয়া হবে⎯ বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের ক্যাডারদের এমন হুমকির কারণে জেলার কয়েকটি থানার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদ এ ঘটনায় নিরাপত্তার জন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের গ্রামে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানিয়ে গত রবিবার রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও যশোর জেলা প্রশাসককে স্মারক লিপি দিয়েছে। জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে ক্যাডাররা যশোর সদর থানার বাগডাঙা, বেজপাড়া, নলডাঙা, মনিরামপুর, কেশবপুর, বাঘারপাড়া ও ঝিকরগাছা থানার হিন্দু সম্প্রদায়ের বসরাসরত গ্রামে ঢুকে নানা হুমকিধমকি দিচ্ছে। তারা বলছে, ১ অক্টোবর ভোটকেন্দ্রে গেলে খুন করা হবে। কাউকে বাংলাদেশে থাকতে দেয়া হবে না। এই হুমকির কারণে এমন নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে হুমকিদাতাদের নামও কেউ মুখে আনছে না। মামলা করার কথাও কেউ ভাবছে না। জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ আরও বলছেন, এমন হুমকিধমকির পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের নানা রকম মিথ্যা মামলায় জড়ানো হচ্ছে।

আরও জানা যায়, প্রকাশ্যে এমন ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের বৈধ ভোটারদের ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেয়ারও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। শহরের নলডাঙা ও বেজপাড়া পূজার মাঠ উত্তর অংশে ৪শ’ হিন্দু ভোটার সম্পর্কে জেলা নির্বাচন অফিসে অভিযোগ করা হয়েছে। এলাকায় ভোটার তালিকা অনুযায়ী ঐ ৪শ’ লোক বাস করে না। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত করে দেখছে। হিন্দু ভোটারদের ভোট দেয়া থেকে বিরত রাখার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটি মহল মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে অনুসন্ধানে দেখা যায়, বেজপাড়ার উত্তর মাঠ অংশে শিল্পীরানী, গীতারানী, মিতালী রায়, পঙ্কজ বিশ্বাস, নলডাঙা এলাকার অঞ্জলি দত্ত, কালীরানী দত্ত, পদ্মরানী দত্ত, শিলারানী দত্ত দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। ভোটার তালিকায় ক্রমিক অনুযায়ী তাঁদের নামও আছে। কিন্তু এই ভোটারসহ ৪শ’ হিন্দু ভোটার সম্পর্কে আপত্তি উত্থাপন করে নাম-ঠিকানাবিহীন দু’টি অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হয়েছে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাণীব্রত ঘোষ বলেন, আমরা বিষয়টি সম্পর্কে জেলা প্রশাসককে অবহিত করেছি। গ্রামগঞ্জ থেকে হুমকিধমকি প্রদানের খবর আসছে। উপজেলাভিত্তিক কমিটি গঠন করে এ সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।

দৈনিক জনকণ্ঠ, ২ সেপ্টেম্বর ২০০১

কৃতজ্ঞতা: শ্বেতপত্র-বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ১৫০০ দিন

Exit mobile version