অপহরণের ৭ দিন পরও পুলিশ মধুপুরের স্কুলছাত্রী গঙ্গা রানীকে উদ্ধার এবং অপহরণকারী দুর্বৃত্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি। ১৪ জুন রাতে মধুপুর থানার হাসিল গ্রামের একটি বাড়ি থেকে ইউসুফ আলি এবং তার পিতা শাহজাহানের নেতৃত্বে ১০/১২ জনের একদল সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে গঙ্গা রানীকে অপহরণ করে। এ সময় অপহরণকারী সন্ত্রাসীদের বাধা দিতে এসে অপহৃতার মা রীনা রানী আহত হন। এ ঘটনার পর মধুপুরের হাসিল, মির্জাবাড়ি, আমবাড়িয়া এবং ব্রাহ্মণবাড়ি এলাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয়-ভীতি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ এবং এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, মধুপুর উপজেলার মির্জাবাড়ি ইউনিয়নের হাসিল গ্রামের অধিবাসী ক্ষুদে ব্যবসায়ী লক্ষ্মীকান্ত দেবনাথের মেয়ে এবং ব্রাহ্মণবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী গঙ্গা রানী দেবনাথ (১৪) ও তার চাচাত বোন লাবনি ১৪ জুন রাত ৮টায় নিজের বাড়ির একটি ঘরে বসে বই পড়ছিল। এ সময় অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত হয়ে একই গ্রামের দুর্বৃত্ত ইউসুফ আলী (২০) ও তার পিতা শাহজাহান আলির নেতৃত্বে ১০/১২ জনের একদল সন্ত্রাসী আকস্মিকভাবে ওই ঘরে ঢুকে পড়ে। দুর্বৃত্তদের দেখেই গঙ্গা ও লাবণি দু’জনেই চিৎকার দেয়। সন্ত্রাসীরা গঙ্গার মুখ চেপে ধরে অপহরণের চেষ্টা করলে গঙ্গা ও লাবণী উভয়েই বাধা দেয়। দুর্বৃত্তদের বাধা দিতে গিয়ে লাবণি আহত হয়। জোর করে সন্ত্রাসীরা গঙ্গা রানীকে ঘরের বাইরে নিয়ে এলে রান্নাঘর থেকে তার মা রীনা রানী এগিয়ে আসেন। এ সময় মারমুখো দুর্বৃত্তরা রীনা রানীকে ছুরিকাঘাত করে গঙ্গাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ওই রাতেই পুলিশ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে অপহরণকারী ইউসুফ আলিকে গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে মধুপুর থানায় অপহরণকারীদের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, অপহরণের দিন রাতে পুলিশ তৎপর হলেও পরে রহস্যজনক কারণে পুলিশি তৎপরতায় ভাটা পড়েছে। এ ঘটনার পর হাসিল, ব্রাহ্মণবাড়ি, মির্জাবাড়ী ও আমবাড়িয়া গ্রাম এলাকায় সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভয়ভীতি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তারা জানান, অপহরণের রাতে দুর্বৃত্তরা অপহৃত গঙ্গাকে নিকটবর্তী হলবাড়ি গ্রামের আবুল ভেণ্ডারের বাড়িতে রাখে। এরপর অন্যত্র পাচার করে। অপহরণকারীরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য অপহৃতার পিতা ও আত্মীয়দের হুমকি দিচ্ছে। না হলে তাদের প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
সংবাদ, ২১ জুন ২০০২